আমরা অনেকেই জানি না, যে মন্ডলীতে প্রথম সাধুর নাম কি? অনেকে না ৯০% হয়ত বা জানে না এই প্রশ্নের উত্তর।। মন্ডলীর প্রথম সাধুই হচ্ছে,যীশুর ডান পাশে ক্রুশ বিদ্ধ হওয়া সেই চোর টি।।সেই চোর টা, যাকে যীশু বলেছিল,আজকেই তুমি আমার সাথে স্বর্গ রাজ্যে যাবে।(লুক ২৩ অধ্যায় ৩৯ থেকে ৪৩ পদ)।।
কে সেই চোর, কি বা তার পরিচয় সেটা তেমন ভাবে জানা জানা যায় না। এমন কি নাম পর্যন্ত জানা যায় নি।সাধু লুক ওনার নাম না উল্লেখ্য করে, মঙ্গল সমাচারে লিপিবদ্ধ করেছেন।এর বাইরেও সিরিয়াক ইনফেন্সী গোসপাল যে টাকে আরাবিক গোসপাল বা মঙ্গল সমাচার বলা হয়ে থাকে, সেখানে এই চোরকে নাম দেওয়া হয়েছে সেন্ট ডিসমাস।।ডিসমাস শব্দটি নেওয়া হয়েছে গ্রীক শব্দ থেকে।। এই নামটিই রোমান ক্যাথলিকরা গ্রহন করেছে।।এছাড়া কপ্টিক খ্রীষ্টানরা ডিমাস।সিরিয়ান অর্থডক্সরা টিটুস এবং রাশিয়ান অর্থডক্সরা” রেখ”নামে ডান পাশের চোরটি সম্বোধন করে থাকে।।যাই হোক, যীশু খ্রীষ্ট ক্রুশ বিদ্ধের সময় ডান পাশের চোর টি কে ডিসমাস এবং বা পাশের চোর টিকে গেটাস বলেই অনেক মঙ্গল সমাচারে উল্লেখ করা হয়েছে।যে গুলোকে মন্ডলী স্বীকৃতি দেয় না।
যীশু খ্রীষ্টের সাথে, আরো দুই জনকে কালভেরীতে ক্রুশ বিদ্ধ করা হয়। মাথার খুলি নামক জায়গায় পৌছানোর পর যীশু খ্রীষ্টের সাথে এক জনেকে বা দিকে আরেক জনকে ডান দিকে ক্রুশ বিদ্ধ করা হয়।। যীশু যখন ক্রুশে ঝুলছিলেন,তখন গেটাস যীশুকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন,তুমি না খ্রীষ্ট? আমাদেরকে এবং নিজেকে বাচাও?
আর তখন সেন্ট ডিসমাস তাকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন,তুমি কি ঈশ্বরকে ভয় পাও না? তুমি তো একই রকম শাস্তি পাচ্ছ।আমরা যে শাস্তি পাচ্ছি তা ন্যায় কারন আমরা তার যোগ্য শাস্তি পাচ্ছি,কিন্তু উনি তো কোন অন্যায় করেনি।এরপর সেন্ট ডিসমাস যীশুকে বলল, প্রভু আপনি যখন আপনার রাজ্যে প্রবেশ করবেন তখন আমার কথামনে রাখবেন।
যীশু এর উত্তরে বলেছিলেন,আমি তোমায় সত্যি বলছি,তুমি আজকেই আমার সঙ্গে পরম দেশে উপস্থিত হবে।।
এখন এখানে একটা প্রশ্ন আসতে পারে, যে,ক্যাথলিক ধর্ম মতে কেউ দীক্ষাস্নাত না হলে কেউ স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না।আর সেন্ট ডিসমাস তো ক্রুশ বিদ্ধ হবার আগে চোর ছিল তিনি কিভাবে সরসরি স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশ করবে? এই প্রশ্নের উত্তরে ক্যাথলিক চার্চ,
” যেখানে কোন দীক্ষাস্নাত হবার পানি নেই, সেখানেও কেউ যদি দীক্ষাস্নাত হবার ইচ্ছা পোষন করে,সেটাকেও দীক্ষাস্নান হিসেবে ধরা যেতে পারে।।দ্বিতীয় ভ্যাটিকান মহাসভায় বলা হয়েছে যে,যারা নিজেদের কোন কারন ছাড়াই, খ্রীষ্ট বা চার্চের সুসমাচার জানে না,কিন্তু তারা অন্তরে যীশু খ্রীষ্টের সন্ধান করে এবং যীশুর নির্দেশ পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করে থাকে এবং কর্মের মাধ্যমে তা পালনের চেস্টা করে।তারাও শ্বাশত পরিত্রান লাভ করবে।।সেই হিসেবে সাধু ডিসমাস ও শ্বাশত পরিত্রান লাভের চেস্টা করেছে।।তাই উনিও আমরা বিশ্বাস করি উনি যীশু খ্রীষ্টের সাথে পরম রাজ্যে প্রবেশ করেছেন।
এছাড়া এফেসীয় অধ্যায় চার পদ আটে ও সাধু ডিসমাসের কথা বলা আছে,তিনি উর্ধ্বে গেলেন সাথে বন্দিকেও নিয়ে গেলেন।যাই হোক সেন্ট ডিসমাসের জন্ম কবে সেটা জানা যায় না, তবে উনি গালীলের লোক ছিলেন বলেই ধরা হয়ে থাকে।। এবং ৩০ থেকে ৩৩ খ্রীষ্টাব্দে যীশু খ্রীষ্টের সাথে ক্রুশ বিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।। ২৫ শে মার্চ রোমান ক্যাথলিকগন সেন্ট ডিসমাসের পর্ব পালন করে আর অর্থডক্স চার্চ পালন করে পূন্য শুক্রবার।।