গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে পাহাড়ে চলছে নিরব এক যুদ্ধ। পাহাড়ি আর বাঙ্গালীদের যুদ্ধ।এক শীতল যুদ্ধ, যা বার বার ফিরে ফিরে আসছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, শেখ হাসিনা, এই পার্বত্য অঞ্চলকে খ্রীষ্টান রাস্ট্র হিসেবে যে ষড়যন্ত্রের কথা বার বার বলেছেন, আমি সমতলের একজন খ্রীষ্টান হিসেবে কখনো মেনে নিতে পারি নি।আমরা বাঙ্গালী খ্রীষ্টানরা কোন দিন ও চাই না,যে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেতে হলে আমাদের পাসপোর্ট, ভিসা করে যেতে হবে।শেখ হাসিনা, যে ভাবে বিষয় টাকে উপস্থাপন করেছিলেন,তার বিরোধীতা করে, শেষ পর্যন্ত মাননীয় আর্চ বিশপ মহোদয় কে প্রেস নোট দিয়ে খ্রীষ্টানদের অবস্থান সম্পর্কে, জানাতে বাধ্য হতে হয়েছিল।ধর্মান্তরিত করা,বা ধর্মের প্রচার করা এক বিষয় আর খ্রীষ্টান রাস্ট্র তৈরী করা আরেক বিষয়। সাবেক প্রধান মন্ত্রী, পুর্ব তিমুরের সাথে এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকে মিলিয়ে,বিষয় টাকে গুলিয়ে ফেলেছিলেন।পুর্ব তীমুর আর পার্বত্য অঞ্চলের প্রেক্ষাপট কোন দিন ও এক নয়। কোন দিন পুর্ব তীমুর কি ভাবে এশিয়ার বৃহত্তম ক্যাথলিক রাস্ট্র হয়েছিল, সেটা হয়ত লেখতে চেস্টা করব। কিন্ত আজকের প্রেক্ষাপট টা ভিন্ন।

পার্বত্য চট্রগ্রাম -রাঙামাটি ,খাগড়াছড়ি ,বান্দারবান।

পার্বত্য অঞ্চলে ১৯৯১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী মোট ২৭ টি আদিবাসীদের বসবাস করার কথা থাকলেও, পরবর্তী আদমশুমারীতে আমাদের কাছে জানানো হয় এই অঞ্চলে এখন মাত্র ১৩ টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস। প্রায় ১৩২৯৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই অঞ্চলে এক টা সময় আদিবাসিদেরই বসবাস ছিল।তবে  ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে।বিশ কোটি বছর আগে হিমালয় পর্বত সৃষ্টি হওয়া  গিরিজন আন্দোলন ( Mountain Building Tectonic Movement)  এর সময়, এই পার্বত্য অঞ্চল সৃষ্টির পরে এই এলাকায় মগ থেকে শুরু করে মুসলিমরা শাসন করেছে।১৩৪০ সালে সোনারগাঁও থেকে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ এই অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করে,এই অঞ্চল নিজের রাজ্যত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন।এরপর প্রায় একশ বছর এই অঞ্চল মুসলিম শাসনের অন্তভুর্ক্তি থাকলেও ১৫১৩ সালের দিকে ত্রিপুরার রাজা ধন মানিক্য এই অঞ্চলের বিশেষ কিছু অংশ দখল করে নেন।কিন্ত বাংলায় হোসনী বংশের সুলতান আলাউদ্দিন শাহ, তার সেনাপতি পরাগল শাহকে এই অঞ্চলে অভিযানে পাঠান, এবং এই চট্রগ্রাম অঞ্চল আবার উদ্ধার করেন। আলাউদ্দিন শাহ চট্রগ্রাম কে দুই ভাগে ভাগ করেন,এক অংশে শাসন কর্তা হন পারাগল খান, আর আরেক অংশের ছিল খোদা বক্স খান। এই খোদা বক্সের আওতায় ছিল এই পার্বত্য অঞ্চল সমুহ।

দিল্লীতে তখন সম্রাট শের শাহ আমল।।ঠিক সেই সময় এই অঞ্চলে আগমন ঘটে খ্রীষ্টান পর্তুগীজদের। তারা দিয়াং আর আরাকানে বসতি স্থাপন করে।এই অঞ্চলে পর্তুগীজদের আগমনের কাহিনী আমার একটি লেখায় বিস্তারিত আছে বিধায় এখানে আর উল্লখ্য করলাম না।লেখাটার  লিংক দিয়ে দিচ্ছি-চট্রগ্রামের দিয়াং এ খ্রীষ্টান গনহত্যা, যে ইতিহাস হয় নি বলা। পর্তুগীজদের সাথে আরাকান দের অনেক গুলো যুদ্ধ হয় তার মাঝে একটি ছিল দ্বিতীয় সন্দীপের যুদ্ধ।এই যুদ্ধের পর মোটামুটি অনেক টা সময় ধরে এই অঞ্চল এ পর্তুগীজরা রাজত্ব করে।কিন্ত ১৭৬০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী   এই অঞ্চলে বিশেষ ক্ষমতা দখল করে।এত দিন ধরে, এই অঞ্চল চট্রগ্রাম অঞ্চল নামেই পরিচিত ছিল। ব্রিটিশরা এই চট্রগ্রাম কে ভাগ করে নাম দেয় পার্বত্য চট্রগ্রাম।১৭৬০ সালে থেকে ঠিক একশ বছর পর ১৮৬০ সালের ২৬ শে জুন এক নোটিফিকেশন জারি করে,যার নাম্বার ছিল ৩৩০২। এই নোটিফিকেশন এর  আওতায় ১৮৬০ সালের পহেলা আগষ্ট ফ্রন্টিয়ার এক্ট ২২ এফ ১৮৬০ এর আওতায় এই চট্রগ্রাম অঞ্চলে ভাগ করে, পার্বত্য অঞ্চল কে পার্বত্য চট্রগ্রাম নামে একটি বিশেষ অঞ্চলে ভাগ করে।এবং ১৯০০ সালে পহেলা মে এই অঞ্চলকে তিন টি জেলাতে ভাগ করে দেয়। এতদিন বাঙ্গালীরা সেখানে থাকলেও আদিবাসীদের দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে নোটিফিকেশন ১২৩ পি ডি,চিটাগং হিল ট্রাক্টস, রেগুলেশন চালু করে।এতে করে এই অঞ্চল আদিবাসিদের বসবাসের জন্য বিশেষ ভাবে গৃহিত হয়ে যায়। ১৯০০ সালের এই নোটিফিকেশন এর জন্য এই অঞ্চলে সব ধরনের অভিগমন বন্ধ হয়ে যায়। এবং এই বিশেষ অঞ্চলে শুধু মাত্র আদিবাসী দের বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।। ব্রিটিশদের অনেক কিছু সাথে আমি দ্বিমত হলেও এই বিশেষ আইনের জন্য ব্রিটিশদের আমি ধন্যবাদ জানাই।কারন ব্রিটিশরা ঠিকই বুঝেছিল,সমতলের মানুষ জন এই সমস্ত মানুষদের শান্তিতে থাকতে দিবে না।যাই হোক,এই এক্টের আওয়ায়, ভারত থেকে চাকমা,মারমা,লুসাই, ত্রিপুরাদের এই অঞ্চলে আসার জন্য বিশেষ ভাবে উৎসাহিত করা হয়।

পার্বত্য চট্রগ্রামে খ্রীষ্টান পল্লী ।

ব্রিটিশ দের এই এক্ট আইয়ুব খানের পছন্দ হয় নি।১৯৬৪ সালে আইয়ুব খান এই অঞ্চলকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৬৪ সালের ঢাকার হাইকোট ৫১ নম্বার অনুচ্ছেদ, যেটা এই।অঞ্চলকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছিল সেটাকে রোহিত করেন।তার ফলে এই অঞ্চলে বাঙ্গালীরা আবার বসবাসের আবার ক্ষমতা ফিরে পায়। ১৯৬৪ সালে সেই ক্ষমতা ফেরত পেলেও বংবন্ধু শেখ মুজিব এই অঞ্চলকে আদিবাসিদের জন্যই ভাবতেন। যার ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলে তেমন বাংগালী দের বৃদ্ধি পায় নি।শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর জেনারেল।জিয়া ১৯৮০ সালে বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নদী  ভাংগন, গৃহ হীন দের ঠাই দিতে শুরু করে।এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক জোর পুর্বক লাইগেশন করানো হয় আদিবাসীদের। ১৯৮০ সালে ৪০ হাজার বাঙ্গালিকে এই অঞ্চলে নিয়ে আসা হয়,দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। উদ্দেশ্য ছিল,সংখ্যা দিয়ে আদিবাসীদের পরাস্ত করা।১৯৭১ এর আগে এই অঞ্চলে মোট জন সংখ্যার ৯% ছিল বাঙ্গালী সেখানে আজ ৫১ % বাঙ্গালীর বসবাস।

এবার আসি,পাহাড়ে কিছু হলেই খ্রীষ্টানদের কেন জড়ানো হয় সেই বিষয়টাতে । বেশ কিছুদিন ধরেই খ্রীষ্টানদের ঘিরে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে,খ্রীষ্টানরা নাকি পার্বত্য চট্রগ্রাম দখল করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বানাবে!! এই ধরনের অপপ্রচার আসলেই কি খ্রীষ্টানরা মেনে নিবে?পার্বত্য চট্রগ্রাম, বান্দারবান, খাগড়াছড়ি,আর রাঙ্গামাটি নিয়ে গঠিত। এখানে সব জাতী সত্ত্বার মানুষ জন বাস করে। তাহলে কেন অযথা খ্রীষ্টানদের নিয়ে পরে আছে এক শ্রেনীর মানুষ?

আসলে এই গুলো বলে খ্রীষ্টানদের দমন পীরনের একটা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরের দুই, সন্তু লারমার সাথে বাংলাদেশ সরকার যে চুক্তি করেছিল,সেটা সরকার কত টুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছে? ১৯৬০ সালে যখন পাকিস্তান সরকার কাপ্তাই বাধ দিয়ে যখন এক লক্ষ আদিবাসীদের গৃহহীন করা হয়েছিল তখন থেকেই মূলত শুরু হয় টিকে থাকার যুদ্ধ।মূলত টিকে থাকার যুদ্ধ কে কেন্দ্র করেই ১৯৭২ সালে গঠন করা হয় পার্বত্য ছাত্রসংগ্রাম জনসংহতি সমিতি। যা আমরা শান্তি বাহিনী হিসেবে জানি।দেশ স্বাধীন হবার পর বঙ্গবন্ধু যখন ঘোষনা দিলেন যে বাংলাদেশে কোন সংখ্যালঘু নেই, সবাই বাঙ্গালী। এই ঘোষনার প্রতিবাদ করে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার নেতৃত্বে সংখ্যালঘু পাহাড়ীরা একত্রিত হতে শুরু করে।

মূলত, পাহাড়ি আদিবাসীদের উপর নির্যাতন শুরু হয়, সেনা শাসনের সময়। পাহাড়ী আদিবাসী জন গোষ্ঠী কোনদিন ও পাহাড়ে বাঙ্গালীদের উপস্থিতি মেনে নিতে পারে নি। পার্বত্য শান্তি চুক্তির প্রধান দাবীই ছিল,পাহাড়ের ভূমি যেন বাঙ্গালীদের না হয়। আমি বর্তমানে যে অঞ্চলে কাজ করছি,এখান থেকে বান্দারবান সীমানায় যেতে মিনিট ৫ এর মত লাগে।কিন্ত বান্দারবানে এই অংশে এখন আর আদিবাসীদের বসবাস খুব একটা চোখে পরে না। মাইলের পর মাইল এখন বাঙালিদের বসবাস। এরাকেউ কিন্ত এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা নন।আপনারা যারা রাজনীতি সচেতন মানুষ তারা জানেন যে,ভারতে কাস্মীরীদের একটা বিশেষ সুরক্ষা আইন ছিল। যা ভারতের সংবিধান কাস্মীরীদের দিয়েছিল।৩৭০ ধারা।।এই ধারাতে, কাস্মীরীরা বিশেষ সুযোগ সুবিধা পেত। এই কারনে মোদী – অমিত শাহ জুটি এটি যখন বাতিল করে তখন কাস্মীর তখন কুরুক্ষেত্রে রুপ নিয়েছিল।এই ধারাতে কাস্মীরীরে,কাস্মীরী ছাড়া কেউ জমি কিনতে পারত না। কেউ সেখানে জমি কিনে ঘর বাড়িও বানাতে পারত না।এখন এই ধারা বাতিলের ফলে, এখন অকাস্মীরা সেখানে গিয়ে বাড়ি, জমি সবই করতে পারছে,সেই অঞ্চলের স্থায়ী ভাবে বসতি স্থাপন করতে পারছে।এতে মোদী – শাহ জুটির দুইটি কাজ সম্পূর্ন হয়েছে।এক, এতদিন যে কাস্মীর, মুসলিম অধ্যুষিত ছিল সেটা এখন ধীরে ধীরে হিন্দুদের স্থায়ী নিবাস হচ্ছে।আর দুই,যখন হিন্দুদের সংখ্যা বৃদ্ধিপাবে তখন বি জে পি তাদের সেই পুরাতন খেলা খেলতে পারবে।বিভাজনের রাজনীতি। আচ্ছা, বি জে পি এই খেলা শিখলো কোথা থেকে।আমার ধারনা এই খেলা শিখেছে বাংলাদেশ থেকে।

স্বাধীনতার আগে যেখানে পাহাড়িদের সংখ্যা প্রায় ৮০% উপরে ছিল স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সেখানে পাহাড়ী আর বাঙ্গালীদের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী পার্বত্য চট্রগ্রামে মোট জনসংখ্যার এখন ৪২ % বাঙ্গালী মুসলমান আর বাঙ্গালী হিন্দু আছে প্রায় ৪%। মোট ৪৬%।আর বাকীরা আদিবাসী।এর মধ্যে চাকমারা সংখ্যা গরিষ্ঠ।চাকমাদের সংখ্যা ২৭.৫ %,এর পর মারমারা ১৪.৫%,ত্রিপুরা ৬.৫% আর মুরং ২.১%তঞ্চংঘা ১.৯ %। এছাড়াও এখানে আছে,লুসাই, পাংখোয়া, ব্রম, মৃ,খুমি,চাক ছাড়াও অনেক আদিবাসীদের বাস।এখানে বাঙ্গালীদের সংখ্যা কেন এত বৃদ্ধি পেয়েছে।জেনারেল জিয়াউর রাহমান যখন সেনাপ্রধান ছিলেন, তিনি মূলত এখানে আদিবাসীদের সংখ্যালঘু করার ছক একেছিলেন। এখানে যে সকল বাঙালীদের দেখা যায়, তারা আসলে ভূমিহীন, এবং নদী ভাঙ্গনের ফলে উদবাস্তু হয়েছিল। তাদেরকে এখানে আশ্র‍য় দান করে ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রাহমান। ১৯৭৫ এর পর আদিবাসীদের অনেক নির্যাতন করা হয়, মহিলাদের জোর করে লাইগেশন বা জন্ম যেন না দিতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।যাতে আদিবাসীদের সংখ্যা না বাড়ে। আর এখন, এখানে সেই সুফল পেতে চলেছে,বাঙালীরা। কারন এখানে দিনকে দিন আদিবাসীরা সংখ্যালঘু হয়ে যাচ্ছে।১৩২৯৫ কিলোমিটার ভুখন্ডে যারা এত দিন রাজত্ব করত তারা এখন ধীরে ধীরে প্রজাতে পরিনত হচ্ছে।আদিবাসীদের যেভাবে সংখ্যালঘুতে পরিনত করা হচ্ছে,ঠিক একই কাজ করা হচ্ছে ভারতের কাস্মীরে।।

দীক্ষাস্নানের দৃশ্য

আমার জানামতে, আমি এখনো কোন বাঙ্গালী খ্রীষ্টানদের শুনিনে যে, তারা ভুমিহীন হলেও তারা পার্বত্য অঞ্চলে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছে।পার্বত্য অঞ্চলে, যারা খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন করেছে,তারা সবাই আদিবাসী।তবে এই কথা সত্য যে,বাংলাদেশে খ্রিস্টানদের সংখ্যা ০.০৩% হলেও পার্বত্য অঞ্চলে সেই সংখ্যাটা অনেক বেশী। প্রায় ৬%। এখানে, একটা কথা বলে রাখা ভালো যে,এখানে সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ধর্ম হচ্ছে খ্রীষ্টানিটি। ১৯৯১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এখানে খ্রীষ্ট ধর্মের বৃদ্ধির পরিমান ১৩৪.৪৭%।২০১৭ সালে এখানে চার্চের সংখ্যাছিল ৩৬৫ টি যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে হয়েছে ৪৪০। আমি এখানে স্বীকার করে নিচ্ছি, পাবর্ত্য অঞ্চলে খ্রীষ্টানদের সংখ্যা বাড়ছে,তার মানে কি এই আমরা খ্রীষ্টানরা পার্বত্য অঞ্চল কে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। এক বাক্যে বেশীর ভাগ খ্রীষ্টানই এই দাবীর পক্ষে থাকবে না। কারন আমরা কোনদিন ও বাংলাদেশকে ভাগ হতে দেখতে চাই না।আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশী খ্রীষ্টান। অথচ এই খ্রীষ্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।

পাবত্য অঞ্চলকে পূর্বতিমুরের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।পূর্ব তিমুর, ইন্দোনেশিয়ার আগে থেকেই পর্তুগীজ কলোনী ছিল।এখানে আগে থেকেই খ্রীষ্টান জনসংখ্যা বেশী ছিল।আর ইন্দোনেশিয়ানসরকার যে দমন নিপীড়ন করেছে,এই জনগোষ্ঠীর উপর তা একদিন না একদিন স্বাধীন হবারই কথা ছিল।আর শুরু থেকেই পুর্ব তিমুরের জনগন ইন্দোনেশিয়ার বশ্যতা স্বীকার করতে চায় নি। তারা স্বাধীনতার জন্য শুরু থেকেই জোয়ানা গুজমায়ারের নেতৃত্বে সংগ্রাম করে আসছিল। কোন দিন সময় হলে কিভাবে পূর্ব তিতুর মুসলিম রাষ্ট্র থেকে খ্রীষ্টান দেশ হিসেবে আত্ন প্রকাশ করল সেটা নিয়ে লিখব। কিন্ত, পার্বত্য চট্রগ্রামের বিষয় টা সম্পূর্ন ভিন্ন।এখানে আদিবাসীরা সংখ্যায় বেশী হলেও কোন দিন এই অঞ্চলকে স্বাধীন বলে দাবী করেছে বলে আমার জানা নেই। তবে তারা যদি এটা করেও থাকে এখানে খ্রীষ্টানদের হাত আছে বলে আমি মনে করি না।২০২০ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে এক জরিপ করে,সেখানে নাকি বান্দারবানে ১লক্ষের উপর বেশী খ্রীষ্টান আছে বলে দাবী করা হয়। আমার কাছে হাস্য কর লাগে,আমরা পুরো বাংলাদেশে আছি মাত্র সাড়ে তিন লক্ষ। আমাদের ভাওয়াল অঞ্চলে এক লক্ষ মানুষের বাস মনে হয় প্রায়।বাকীদের কথা বাদ দিলাম। তাহলে বান্দারবানে ১ লক্ষ তিন হাজার ৯৯৭ জন খ্রীষ্টান হলে আমাদের সংখ্যা তো মোট জনসংখ্যার ২% হাবার কথা।হাস্যকর,ব্যাপারটা হাস্যকর ছাড়া কিছু না।মোট কথা এই সমস্ত কথা প্রচার করে,সরকার এবং খ্রীষ্টানদের ভিতর দন্ধ সৃষ্টি করার পায়তারা করছে একটি বিশেষ শ্রেনী।তাদের উদ্দেশ্য এই অঞ্চলে খ্রীষ্টানদের মাধ্যমে যে ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে,সেটাকে বাধাগ্রস্থ করতে।আগে যেখানে আদিবাসী ছেলে মেয়েরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল,এখন সেখানে শিক্ষার হার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।আটা ময়দার সুজির মাধ্যমে কেউ কোন দিন নিজ ধর্ম ত্যাগ করে না।আদিবাসীরা যদি খ্রীস্ট ধর্ম গ্রহন করেও আমি বিশ্বাস করি, তারা যীশুকে ভালবেসেই খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন করেছে।।

মুলত খ্রীষ্টান নাম ব্যবহার করলে ,বাঙ্গালীর ধর্মীয় অনুভূতিতে ভালোভাবে আঘাত করা যায় ।পাহাড়ে খ্রীষ্টান সংখ্যা বাড়ুক আর না বাড়ুক ,খ্রীষ্টান শব্দ টা ব্যবহার করে রাষ্ট্রের কাছে খ্রীষ্টানদের পদদলিত করার এক প্রচেষ্টা বার বারই করা হচ্ছে।

9 thoughts on “পাহাড়ে বাংগালি, আদিবাসী  দ্বন্ধের নেপথ্যে,কেন খ্রীষ্টানদের বার বার জড়ানো হয় ।।জেরী মার্টিন গমেজ।।”
  1. With havin so much written content doo you ever run into any problems off plagorism or copyright infringement?
    My blog has a lot of unique content I’ve eijther written myself or outsourced but it looks like a lot of it is
    popping it up all over tthe web without my agreement. Do you knnow any ways to help rwduce content from being stolen? I’d really appreciate it. https://wakelet.com/wake/aELVDN5gLi_VLWYuW6MfD

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *