ভাই,পি এস জি আমি বলার পক্ষপাতী নই।কেন নই, কারন আমার ধর্মের একজন সাধুর নামে একটি জায়গার নাম,শহরের নাম,আমি সেই নামে না ডেকে কেন সংক্ষিপ্ত করব। রিয়েল মাদ্রিদ কে রিয়েল মাদ্রিদ বলেন,বার্সোলোনাকে বার্সোলোনা বলেন, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পুরা নামে যদি ডাকতে পারেন, তাহলে কেন একজন সাধুর নামের ক্লাবকে আপনি সংক্ষিপ্ত করবেন।ঢাকার স্কুল গুলোকে তো আমারা বলি না যে,এস জি স্কুল( সেন্ট গ্রেগরী) কিংবা এস জে স্কুল (সেন্ট যোসেফ)। সাধুদের পুরা নামেই আমরা ডাকি।কিন্ত প্যারিস সেন্ট জার্মেইন কে কেন সংক্ষিপ্ত করেন। ভারতের বিভিন্ন জায়গার নাম চেঞ্জ করে যদি তাদের দেব দেবীর নামে রাখতে পারে,ডাকতে পারে।তাহলে আপনি কেন আপনার ধর্মের একজন সাধুর নাম বলতে পারবেন না।
ভারতের গুজরাটে মোহাম্মাদাবাদ কে চেঞ্জ করে মহাদেব রাখলো,উত্তর প্রদেশে যোগি আদিত্য নাথ তো এলাহাবাদের নাম ই চেঞ্জ করে প্রায়াগরাজ রেখে যদি বাধ্য করে সেই নামে ডাকতে,তাহলে আপনি কেন সেন্ট জার্মেইন এর নাম বলতে লজ্জা পান , ভয় পান। আমি বড়াবড়ই মুঘলদের বিরুদ্ধে।এদের কিচ্ছা কাহিনী পড়ার পর কোন দিন ও এদের পক্ষে এক কলম ও লেখতে মন চায় না।সব গুলা ই ছিল বর্বর। কারন এরা তো,চেংগিস খা,তৈমুর লং, টিপু সুলতান দের বংশ ধর। যারা হাজারে হাজারে শুধু মাত্র ধর্মের অমিল থাকার কারনে মানুষ হত্যা করেছে।হিন্দু মেয়েদের দিনে দুপুরে ধরে নিয়ে হেরমে রেখে ধর্ষন করেছে।এদের নামে কোন ইমারত কে আমি মেনে নিতে পারি না।টিপু সুলতানের নামে কিসের রোড হবে,রোড হলে হোক না হুমায়ুন আজাদ স্যারের নামে কিংবা হুমায়ুন আহমেদের নামে। কিংবা কামিনী রায়ের নামে। এরা কি করেছে,আর ওই গুলা কি করেছে।তাদের নামে ইমারত কে আমার সগৌরবে সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারন করতে হবে, আর একজন সাধুর নামকে কেন সংক্ষেপ করে বলব।সেন্ট জার্মেইন ই বলব,কোন পি এস জি, এই এস জি না।অন্য ধর্মের মানুষ রা জানুক আমাদের ও মহান একজন ব্যক্তি ছিল সেন্ট জার্মেইন।
সেন্ট জার্মেইন, অফ প্যারিস। যাকে বলা হয় ফাদার অফ দ্যা পুর। ৪৯৬ সালে আটুন নামে এক জায়গায় জন্ম গ্রহন করে।শহর টি বর্তমানে ফ্রান্সে অবস্থিত। ৩৫ বছর বয়সে তিনি সেন্ট সিম্পোরিয়ান মঠের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। তিনি কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন, এবং অন্যের দানের উপর নির্ভর করে চলতেন। একজন মঠের প্রধান হয়ে একজন দারিদ্রের জীবন যাপন করতেন। এই কারনে অন্য যাজক গন উনাকে ভয় পেতেন। কারন তারা ভাবতেন উনি হয়ত মঠের সম্পত্তি দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দিবেন। কারন তখন ফাদারকে দরিদ্রদের ফাদার নামে ডাকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।৫৫৫ সালে প্যারিসের বিশপ সিবেলিয়াস মারা যাবার পর রাজা চিলবার্ট সেন্ট জার্মেইন কে প্যারিসের বিশপ হিসেবে স্বাগতম জানান। সেন্ট জার্মেইন, ছিলেন একজন সংস্কার পন্থী মানুষ। তত কালীন সময়ের যুদ্ধ বিগ্রহ বন্ধের জন্য কাজ করতেন।এবং উনার আন্ডারে সমস্ত ফাদার দের, সিস্টারদের একই কাজ করতে উৎসাহ দিতেন। প্যারিসে তিনি তৃতীয় এবং চতুর্থ কাউন্সিল এ উপস্থিত ছিলেন।এবং তিনি বিভিন্ন সংস্কারের পক্ষেই কথা বলেছেন।এবং তিনি খ্রীষ্ট ধর্মের ভিতর যে সকল পৌত্তলিক প্রথা ছিল সেই গুলোকে বন্ধ করতে রাজাকে রাজি করিয়েছিলেন।সেন্ট জার্মেইন কোন প্রকার অনৈতিক কাজ পছন্দ করতেন না।যাই হোক, ২৮ শে মে ৫৭৬ সালে সেন্ট জার্মেইন ৮০ বছর বয়সে মারা যান। উনি এত টাই ধার্মিক ছিলেন যে, লোকে বিশ্বাস করত অতি মহামারীতে উনি ত্রার্নকতা হিসেবে ইশ্বরের কাছে লোকদের জন্য প্রার্থনা করবেন।এই জন্য নয় শতাব্দী ধরে প্যারিস সহ ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় উনার মৃত দেহাবশেষ নিয়ে শোভাযাত্রা হত,রোগ হতে বাচার জন্য।এবং এই মহামানব কে আরো স্মরনীয় করে রাখার জন্য ১০২০ সালে রবাট দ্যা পাইয়াস সেন্ট জার্মেইন চার্চের আশে পাশে অংশ গুলোকে শহরে রুপান্তরিত করেন এবং সেন্ট জার্মেইন এর নামে নামকরন করেন।
এবার আবার পুরাতন কথায় ফেরত যাই।সেন্ট জার্মেইন যদি যেন তেন লোক হলে কি,এত বছর পর কি কোন একটা অঞ্চলের নাম করন করা হত। এই পি এস জি, পি এস জি বলে বলে আসল নামটা আমাদের ভুলিয়ে দেবার চেস্টা করা হচ্ছে।আমি অনেক গুলো সংগঠনের সাথে, সমিতির সাথে জড়িত থাকার সুবাধে ভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন বানানোর দ্বায়িত্ব পরত।একবার, এক ব্যানার বানানোর সময়, পেইন্টার জিজ্ঞেস করল,স্যার কালীগঞ্জ বানানে দীর্ঘ ই নাকি ঋসু ই দিব।আমি জিজ্ঞাস করলাম এই দুই বানানের পার্থক্য কি? উত্তর আসল দীর্ঘ ই হল কালী দেবীর নামে আর ঋসু ই হল কলমের কালীর নামে।যে দেশে নামের ভিতর সাম্প্রদায়িকতা খুজে বের করা হয়,সেই দেশে হিন্দু দেবীর নাম দেখে নামের বানান চেঞ্জ হয়ে যায় সেই দেশে এক খ্রীষ্টান সাধুর নাম পত্র পত্রিকায় স্থান পাবে সেটা চিন্তা করাও পাপ। তাই এই কাজটা আমাদের ১০ লক্ষ খ্রীষ্টান কে ই একটু একটু করে করতে হবে।আপনি মেসির ছবি শেয়ার করছেন, তাহলে মেসির হাতে যে যীশু খ্রীষ্টের ছবি আকা ছবি আছে সেটাও শেয়ার করুন না।অন্যের যদি, সালেহ, কিংবা পগ্রবা র প্রার্থনার দৃশ্য শেয়ার করতে পারে,তাহলে আপনি কেন ভয় পান। আপনি তো আর কারো বিপক্ষে লিখছেন না,তাই না।পরিশেষে বলব,খুব সুক্ষ্ম ভাবে ই আমাদের দেশের মিডিয়া প্যারিস সেন্ট জার্মেইন কে পি এস জি বলে চালাতে চেস্টা করে।খ্রিস্টান কোন নামকে হেডলাইন হতে দেওয়া যাবে না,এটাই তাদের নীতি। অত্যন্ত পক্ষে আমার তাই মনে হয়। কালীগঞ্জ আমার জন্ম স্থান। সেখানে একটা স্কুল আছে,ভাওয়াল রাজার নামে।কালীগঞ্জের অনেক ইয়াং জেনারেশন সেই রাজার নাম জানে না,অথচ পরীক্ষা দিতে যায় সেই স্কুলে। রাজা রামেন্দ্র নারায়ন । আর আর এন পাইলট স্কুল। বরিশালে বি এম কলেজ আসল নাম হচ্ছে বজ্রমোহন কলেজ, সিলেটের এম সি কলেজ আসল নাম মুরারী চাঁদ কলেজ, এম এম কলেজ মদন মোহন কলেজ। খুব সুক্ষ্ম ভাবেই নাম গুলোকে এমন করা হচ্ছে।নাম থাকবে কিন্ত কেউ উচ্চারণ করবে না।