পিলাতের সভায় যীশু খ্রীষ্টের বিচারের মূহুর্ত।

‘পন্তেয় পিলাতের শাসন কালে যাতনা ভোগ করিলেন কিংবা আমি তো তার কোন দোষ খুজে পাচ্ছি না।” এই সমস্ত বাক্যের সাথে জড়িত যে নামটা সেটা হল পন্তেয় পিলাত।পিলাত, পিলাত বলতে সেই বিচার এর কথাই আমরা জানি। কিন্তুএর পরে পিলাতের কি হয়ে ছিল সেটা আর কত জন জানি।আজকে না হয় পিলাত নিয়েই কথা হোক। পিলাত সমন্ধে ইতিহাসে তেমন কিছু জানা যায় না। পিলাত এক রহস্যের নাম। পিলাত ধারনা করা হয় ইটালীর কোন এক অশ্বারোহী পরিবার কিংবা স্কটল্যান্ড এ জন্ম গ্রহন করেন। এই দুই ধরনের মতামত পাওয়া যায়। পিলাত যুদেয়া অঞ্চল শাসন কর্তা ছিলেন। রোমান সম্রাজ্রের প্রিফেক্ট হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করতেন ২৬ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ৩৬ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত।পিলাত সমন্ধে বলতে গিয়ে আলেকজান্দ্রিয়ার ইহুদি দার্শনিক ফিলো ( জন্ম খ্রীষ্টপূর্ব ২০ অব্দে মৃত্যু ৫০ খ্রীষ্টাব্দে) উনি লিখেন যে পিলাত প্রথম জীবনে ঘুষ, ডাকাতি, বিনা বিচারে মৃত্যু দন্ড, এবং চুড়ান্ত নিষ্ঠুর শাসক ছিলেন। যিনি নিজের ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করেছিলেন। পিলাত ছিলেন চরম পর্যায়ে এক দুর্নীতি গ্রস্থ সম্রাট। পিলাত ইহুদিদের পছন্দ করতেন না। পিলাত ইহুদিদের যে সমস্ত আইন কানুন ছিল সেগুলার চরম ভাবে বিরোধিতা করতেন৷

পিলাতের বিচার সভায় যীশু খ্রীষ্ট

এই বিরোধিতা এতই তীব্র ছিল যে শেষ পর্যন্ত পিলাত কে রোমে ডেকে পাঠানো হয়। এবং এরপরই পিলাত সমন্ধে আর কিছু জানা যায় না। তবে ধারনা করা হয় যে পিলাত আত্ন হত্যা করেছিলেন। আবার এইও ধারনা করা হয় যে পিলাত কে হত্যা করা হয়েছিল এবং তার দেহ টাইবার নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তবে যে ধারনাটা সবচেয়ে বেশী সমাদৃত সেটা বলেছিলেন টিরট্যুলিন নামের একজন লেখক। যার জন্ম হয়েছিল ১৫৫ খ্রীষ্টাব্দে আর মৃত্যু হয়েছিল ২৪০ খ্রীষ্টাব্দে। উনি আফ্রিকা অঞ্চল এর বাসিন্দা ছিলেন। উনাকে নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে। কারন এই লোকের কারনে খ্রীষ্ট ধর্ম এর ইতিহাস ভালো ভাবে জানা যায়। যাই হোক উনি দাবী করেন যে,পিলাত যীশুর বিচার করার পর অত্যন্ত অনুশুচনায় ভোগেন। এবং তিনি পর্রবতিতে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহন করেন।এবং উনি সম্রাট caligula কে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন করার জন্য অনুরোধ করেন।এতে সম্রাট ক্ষুব্দ হয়ে পিলাত কে হত্যার নির্দেশ দেন। এবং তার নির্দেশে পিলাত কে হত্যা করে টাইবার নদিতে ফেলে দেওয়া হয়। পিলাত কে শিরচ্ছেদ করে হত্যা করা হয় শুধুমাত্র খ্রীষ্ট বিশ্বাসের কারনে।শুধু পিলাত কে নয় পিলাতের স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে খ্রীষ্ট বিশ্বাসের জন্য দুই বার ক্রুশ বিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।

”তোমরা কার মুক্তিচাও,যিশুর নাকি বারাবাসের ”জনতার উদ্দেশ্যে পিলাত।

যাই হোক, লেখা বড় হয়ে যাচ্ছে,শর্ট করি। পিলাত কে অনেক চার্চ সাধু হিসেবে মনে করে। যেমন ইথিওপিয়ান চার্চ। পিলাত এবং তার স্ত্রীকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করে তারা।২৫ শে জুন পিলাত এবং তার স্ত্রীর নামে পর্ব পালন করা হয়ে থাকে প্রতি বছর।পিলাতের স্ত্রী যার নাম ছিল ক্লোডিয়া প্রোকুলা তাকে পুর্ব অর্থডক্স ২৭ শে অক্টোবর তার দিবস পালক করে এবং উপাস থাকে এবং ৯ ই নভেম্বর রাশিয়ান অর্থডক্স পিলাতের স্ত্রীর নামে দিবস পালন করে।সাধু পল তার পত্রে পিলাতের স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। যাই হোক ইতিহাসে পিলাত চরিত্র টি একটু কুয়াশাচ্ছন্ন। অমিমাংসিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *