—————————–পহেলা বৈশাখ আসলে কে প্রবর্তন করেন ?———————————————————-

আমরা যখন ছোট ছিলাম আমাদের বলা হত সম্রাট আকবর পহেলা বৈশাখ চালু করেন ১৫৮৪ সালের ১০ ইোনাতস মার্চ বা ১১ ই মার্চ ।মোঘলরা যখন ভারত বর্ষে রাজত্ব করে তখন উনারা হিজরী সালের সাথে মিল রেখে খাজনা আদায় করত ।কিন্তু হিজরি সাল চন্দ্রের সাথে মিল রেখে করা হত বিধায় প্রজাদের ফসলের সাথে কৃষি পন্যের খাজনা পরিশোধ করা সম্ভব হত না ।এর ফলে সম্রাট আকবর তার বিখ্যাত জোতিষ্য বিঞ্জানী ফতেউল্লাহ সিরাজীকে কাজে লাগান। উনি হিজরি সালের সাথে মিল রেখে নতুন এক ফসলি বর্ষ চালু করেন ।এবং সেটাকে বাংলা নববর্ষ বলা হয়ে থাকে ।এটা মোটামোটি আমরা সবাই জানি ।কিন্তু ঝামেলা টা অন্য জায়গায় ।সম্রাট আকবরের আগে আরো একজন বাংলা নববর্ষ চালু করার দাবী রাখতে পারে ।তিনি হলেন সম্রাট শশাংক ।তিনি ছিলেন গৌড় অধিপতি ।উনার রাজত্ব কাল খুব সম্ভবত ৫৯০ থেকে ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ।এখন উনি এসে একটা বর্ষ চালু করেন ৫৯৪ সালের দিকে ।এই তথ্য টা পাওয়া যায় নিতিশ সেন গুপ্তের বই থেকে যার নাম দ্যা লান্ড অব টু রিভার্স ।

পশ্চিম বঙ্গের বাকুরা জেলার ডীহার গ্রাম, সোনাত পতন নামে দুইটা গ্রামের টেরাকাটার মন্দির পাওয়া যায় যেখানে বাংলা বর্ষের কথা পাওয়া যায় ,যেটা সম্রাট আকবরের রাজত্বের অনেক বছর আগের ,সম্রাট শশাংকের রাজত্বের কাছাকাছি সময়ের ।এখন কথা হইলো গিয়া শকাব্দ আর বাংলা সাল খুব কাছা কাছি ।যদি আমরা ২০২০থেকে ১৪২৭ বাদ দিয় তাহলে আসে ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দ ,যা সম্রাট শশাংকের রাজত্বের সময় কালের মাঝে পড়ে ।আবার সম্রাট আকবর যেভাবে বাংলা নব বর্ষ চালু করছে সেটা দেখা যাক।সম্রাট আকবর উনার শাসন কাল শুরু করে ১৫৫৬ সাল যা হিজরি সাল ছিল ৯৬৩ হিজরী।উনার রাজত্ব কাল থেকে ১৫৮৪ হয় ২৮ বা ২৯ বছর ।তারমানে ৯৬৩+২৯=৯৯১ বাংলা বর্ষ।এবার আমরা যদি ১৪২৭ থকে ৯৯১ বাদ দিয় তাহলে হয় ৪৩৬ ।আর ২০২০সাল থেকে ৪৩৬ বাদ দিলে হয় ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দ ।যা আমাদের ১৫৮৪ সালের সম্রাট আকবরের তারিখ এর সাথে মিলে যাচ্ছে ।তারমানে শশাংক আর আকবর দুই জনই বাংলা নব বর্ষের দাবি দার।কিন্তু আবার ও একটা প্রশ্ন থেকে যায় সম্রাট আকবরের রাজত্বের এলাকার পরিমান ছিল কাবুল থেকে শুরু করে ইরান ,বাংলা পর্যন্ত ।অনেক বড় এলাকা.১২জন সুবেদার নিয়োগ দেওয়া হয় এই সুবা গুলা পরিচালনা করার জন্য ।

এখন প্রশ্নটা হচ্ছে এই জায়গায় হেতের ১২ টা সুবার জন্য এটা সাল চালু করলো না কেন?একই সাল ১২টা সুবার জন্য থাকা ছিল অধিক যুক্তিযত।কিন্তু শুধু মাত্র বাংলায় কেন বাংলা বর্ষ চালু করল?বিষয়টা হচ্ছে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী যে আইন করবেন সেটা সবার জন্যই হবে।তাই নয় কি?শুধু মাত্র গাজীপুরের জন্য না কিংবা ঢাকার জন্য না ।হুম্মম্মম্ম।আকবর বাপজান মনে হয় বাংলায় কিছু পাইত টাইত ,এত দরদ কেরে থাকব?এখানে আরো কথা থাকে যে,সম্রাট আকবরের আমলে বীর দর্পনে শাসন করেছে বারো ভুইয়ারা। যারা মোঘলদের প্রচন্ড বিরুধী ছিল। বারো ভুইয়াদের কোন অংশ ই তো তখন মোঘল রা দখল করতে পারে নি। তাহলে সম্রাট আকবর কিভাবে বাংলায়, বাংলা নববর্ষ চালু করতে পারে? যাই হোক, আমি মনে করি বর্বর মোঘলরা ভারতের অনেক প্রাচীন কৃতী ভেংগে নিজেদের নামে চালানো করছে, ঠিক তেমন নি ভাবে রাজা শশাংকের বাংলা নববর্ষ নিজেদের বলে চালিয়ে নিতে চেস্টা করেছে।সবাইকে রাজা শশাংকের প্রবর্তিত বাংলা নবর্বষের শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *