বাংলাদেশে আপনি এখন যতগুলো টিভি ট্যানেল দেখুন, অন লাইন পোট্রাল গুলো দেখুন কিংবা প্রথম সারির সংবাদপত্র গুলোই দেখুন না কেন, সব গুলা এক মহান ব্রত নিয়ে আসছে যে, যেইভাবেই হোক না কেন ইহুদিদের হারাতে হবে,ছোট করতে হবে, নয়ত ধবংশ কামনা করতে হবে। মোট কথা সত্যি বলা যাবে না। ইনিয়ে বিনিয়ে কিছু একটা ইহুদিদের বিপক্ষে বলতেই হবে।এরা ইহুদিদের ধবংশ কামনা করে আবার ইহুদিদের প্রযুক্তি, সেবা,পন্য দেদারসে গিলে খাচ্ছে।আমি হিপোক্রেট দেখছি,এদের মত হিপোক্রেট দেখি নাই। এখন আবার নতুন ট্রেন্ট চালু করছে, ইহুদি পন্য বয়কট করুন। অনেক কিছুর নাম ই দেয় কিন্ত ফেসবুকের নাম দেয় না। কেন রে,ফেসবুক ইহুদিদের তৈরী এটাও বাদ দে।বুঝেন কি রকম হিপোক্রেট। আপনি,ফেসবুকে আই স্ট্যান্ড প্যালেস্টাইন লিখতে পারলে আমাকে কেন আই স্ট্যান্ড ইসরায়েল লিখতে দিবেন না।এ কেমন বিচার।
যাই হোক মুল আলোচনায় আসি।ইহুদি জাতীঃ
আমরা প্রতিটা খ্রিস্টান ই মোটামুটি জানি যে,বাইবেলের পুরাতন নিয়ম সেখানে ইহুদি জাতীর কথা লেখা আছে।ইয়াকুবের পুত্র ইয়াহুদার নাম থেকে ইয়াহুদি এবং পরবর্তীতে বাংলায় সেটা হয়ে যায় ইহুদি। বংলাদেশে কিছু হইলেই বলে সব ইহুদিদের চক্রান্ত। মানে ইহুদিরা চক্রান্তে সেরাদের সেরা।যাই হোক, ইহুদের ধারনা, আদম হবার ছেলে কায়িন হেবেল মারা যাবার পর, ইশ্বর তাদের আরেক টা সন্তান দেন। তার নাম রাখা হয় শিশ। নুহর মহাপ্লাবনে নুহর তিন ছেলে, তিন ছেলের বউ আর নুহর বউ বেঁচে যায়। আর এই তিন ছেলের এক জনের নাম ছিল শ্যাম, আরেক জনের ছিল হাম,আর তিন নম্বর জনের নাম ছিল ইয়াফাসের। আর এই তিন জনের প্রথম জনের ভিতর থেকেই গড়ে উঠে ইহুদি এবং আরব জাতি। দুই নম্বর জন, জন্ম দেয় হ্যামিটিক জাতি মানে মিশরীয় জাতীর।আর লাস্টের জনের কাছ থেকে জন্ম নেয় ইন্দো-ইউরোপীয় জাতী মানে,আমরা। শ্যামের এই বংশ থেকে জন্ম হয় আব্রাহাম। আর এই আব্রাহাম থেকে জন্ম হয়( স্ত্রীর গর্ভে জন্ম হয়) ইসাহাকের আর দাসীর গর্ভে জন্ম হয় ইসমাইলের।
আর এই ইসাহাকের ছেলের নাম ইয়াকুব আর তার থেকে জন্ম নেয় ইসরাইল নামের জাতী আর ইসমাইল থেকে জন্ম নেয় আরব জাতী।(হাতের কাছে বাইবেল না থাকায় কিছু কিছু নাম ভুল হতে পারে)।ইয়াকুবের এক ছেলে, ছোট বেলায় ধর্ম বইতে পড়েছিলাম সবারই মনে থাকার কথা যোসেফ এর নাম।যোসেফ কে তার ভাইয়েরা মিশরে বিক্রি করে দেয় আর পশুর রক্ত মাখা কাপড় এনে বলে হিংস্র জীব যোসেফ কে খেয়ে ফেলেছে, সেই যোসেফ যখন তার পিতা ফিরে পায় তখন তিনি আর ১২ ছেলেকে মাফ করে দেন।আর এই বার ছেলের,এক ছেলে লেবী ছিল যার নাম তার বংশে জন্ম নেয় আমাদের মোশী,অন্যদের মুসা। মিশরীয়রা ইহুদীদের ৪০০ বছর অত্যাচার করে আর মোশির নেতৃত্বে তাদের এই আগ্রাশন শেষ করে ইহুদিরা। মোশী যখন তার জাতীকে মিশর থেকে উদ্ধার করে তিনি কিন্তু এসে উপস্থিত হন কেনান শহরে।যা ফিলিস্তিন এর একটি শহর।
ইয়াকুবের বা যাকোব ১২ ছেলের একজন এর নাম ছিল ইয়াহুদা বা যুদা ।আর এই ইয়াহুদার থেকেই জন্ম হয়, দাউদ,সোলায়মন বা সলোমন বা , এবং প্রভু যীশুর খ্রীস্টের। ১২ ছেলের ভিতর বাকী ছেলেদের বংশ গুলো পরবর্তীতে ইয়াহুদার বংশের সাথে মিশে যায়। এবং সকল কে এক সাথে ইহুদি বলা শুরু হয়। মিশরীয়রা এই ইহুদিদের ডাকত হিব্রু নামে।যেই নামের অর্থ “পার হয়ে আসা”। যেহেতু এরা নদী পার হয়ে এসেছিল, তাই তাদের নাম দেওয়া হয় হিব্রু। মোশীর সাথে ফারাও রাজাদের কি ঘটেছিল এই ঘটনা টা সবার জানা বিধায় আমি আর উল্লেখ্য করলাম না।তবে একটু তিতা হলেও সত্য, যীশু ইহুদি থাকলেও, ইহুদী ধর্মের সাথে খ্রীষ্ট ধর্মের কোন মিল নেই। যেমন, ইহুদিরা অন্য কেউ বলি দিলে সেই মাংস খায় না আমরা কিন্ত খাই। আবার আমাদের মেয়েরা অন্য ধর্মের ছেলেদের সাথে বিয়ে হয়, ওদের এটাতে কঠিন বাধা।
ওরা জোরে প্রার্থনা করে,আমরা করি না।ওরা টুপি পরে আমারা পরি না।সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ওরা কখনো যীশুকে ত্রার্নকর্তা হিসেবে মেনে নেয় নাই।এক কথায় ওরা যীশুকে নবী মুক্তিদাতা হিসেবে মেনে নিতে পারি নি।এবার আসি,আব্রাহাম এবং পরবর্তী নবী এবং ভাববাদীদের ব্যাপারে।আব্রাহামের কথা না বললে ইহুদী জাতীর ইতিহাস অসম্পুর্ন রয়ে যাবে। কারন ইহুদী, মুসলিম,এবং খ্রীস্টান সব ধর্মেই উনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আর ইহুদী জাতীর কাছে, উনি সেই জাতীর পিতা। মানে ইহুদী জাতীর পিতা হলো আব্রাহাম। ইহুদী ধর্মে যিহুবা হল প্রধান দেবতা বা সৃষ্টা। এই যিহুবার সাথে চুক্তি হয় আব্রাহামের। সেই চুক্তি মোতাবেক তিনি আব্রাহাম কে এমন এক দেশ উপহার দিবেন যে, সেখানে শুধু শান্তি আর শান্তি। এবং শান্তির দেশটার নাম ছিল কেনান। বর্তমান প্যালেস্টাইন। ইহুদীরা পৃথিবীর সর্বত ই বসবাস করত।
তবে ইহুদীরা যেখানে বসবাস করত সেই এলাকার দেবতাকেই পূজা করত। যেমন মিশরীরে থাকা কালীন সময়ে ফারাওদের ধর্ম কিংবা ব্যবিলন ( বর্তমান ইরাকে অবস্থিত) এ থাকা কালীন সময় তাদের ধর্ম। মোট কথা যেই পাত্রে যেত সেই পাত্রের রুপ ধারন করত। এই কারনে ইহুদীদের প্রধান দেবতা মানে যিহুবা তিনি মাঝে মাঝে রাগ করতেন। আমরা বাইবেলে লুর্দের কাহিনী দেখি, কিংবা নোহার কাহিনী দেখি, এই সকল নগর ধবংশ করার জন্য প্রধান কারন ছিল যিহুবা কে ভুলে অন্য দেব দেবীর উপাসনা করা। তেমনই এক দেবতা ছিল মার্ডুক। তিনি ছিলেন তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথম দিকের একজন দেবতা। ব্যাবিলন সভ্যতার অন্যতম প্রধান দেবতা ছিলেন তিনি। রাজা নেবুচাদ নেইজার ( যিনি ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান তৈরী করেছিলেন) খ্রীস্টপূর্ব ১১০০ অব্দে এই দেবতাকে প্রধান দেবতা হিসেবে মনোনীত করেন । যাই হোক এই ধরনের আরেক দেবতা ছিল বেল। এদের উপসনা যিহুবা সহ্য করতে পারে নি। এই কারনে ইহুদীদের উপর অনেক বার প্রতিশোধ নিয়েছিলেন তিনি।
তবে প্রতিশোধ নিলেও, তিনি ইহুদীদের ভালোবাসতেন। তাই তিনি তাদের মন পরিবর্তন এর জন্য বিভিন্ন নবী পাঠান। তেমনই এক নবী ছিল মোশী, মজেস কিংবা মুসা। এই মোশীর কাছেই ১০ আজ্ঞা প্রেরন করা হয়। আর মোশীর সেই দিক নির্দেশনা মূলক গ্রন্থ কে ইহুদীরা বলে তালমুদ, মুসলিমরা বলে তাওরাত আর আমরা বলি ওল্ড টেস্টিমেন্ট ( ৫ টা পুস্তক মোশীর লেখা)।তিশরী,হেশবান,কিসলেব,তেবেত,শেবেত, আদার, নিসান,আইয়ার,সিবান তামমুঝ,আব আর ইলুল এই হলো ইহুদি বার মাসের নাম। আর এই প্রত্যেক মাসেই কোন না কোন পর্ব পালন করা হতো।যেমন,গোদালিয়াহ রোজা,তামমুঝে উপবাস কিংবা তৌরাত উৎসব। ইহুদী ধর্ম মতে আদমের জন্মের ১৯৪৮ বছর পর আব্রাহামের জন্ম হয়, আর১০৫৬ বছর পর জন্ম হয় নোহার।আদম বেঁচে ছিল ৯৩০ বছর,আদমের ছেলে শীশ বেঁচে ছিল ৯১২ বছর, নুহ ১৪০০ বছর,আব্রাহাম ১৩৫ বছর,মোশী ১১০ বছর,দাউদ ৭০ বছর এবং যীশু খ্রীষ্ট ৩৩ বছর। কারো হাতের কাছে বাইবেল থাকলে দেখতে পারেন যে,পুরাতন নিয়মে অনেক গুলা পুস্তকের কথা আছে।যেমন ধরেন,ইস্টের পুস্তক, দানিয়েল, ইশাইয়া,উযায়ের,সোলাইমান,আমোস, জাকারিয়া, মালাখি, সফনীয়, আরো অনেক। এরা মুলত ইহুদী জাতীর সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনীগুলোকে বর্ননা করেছেন।
এবং নিয়ম কানুন উল্লেখ করেছেন। রাজা দাউদ ও ১০০০ অব্দে ৭৩ টি গান রচনা করেছিলেন। যেগুলা আপনারা এখনো বাইবেলে পাবেন। মূলত সোলায়মান,আগুর,হিস্কিয়ের এদের গ্রন্থ গুলোকে বলা হয় মেসাল। এই গ্রন্থ গুলা মূলত ইহুদীদের ইতিহাস। আমরা কিংবা মুসলমানরা এ বিশ্বাস করি স্বর্গ দেবতার কথা, সেই স্বর্গদেবতাদের ইহুদিরা তিন ভাগে ভাগ করেছে।সিরাফিম, চিরাবিম,ওনাকিম। সবাই কে যার যার ডিপার্টমেন্ট ভাগ করে দেওয়া ছিল। যেমন ভুমিকম্প দেখতো রাশিয়েল দূত,তুষারপাত ডিপার্টমেন্ট ছিল সালগিয়েল দূতের আন্ডারে সমুদ্র বিভাগের প্রধান ছিল রাহাব দূত। আর বিশেষ ক্ষমতাবান দূত ছিল মাইকেল,রাফায়েল,গাব্রিয়েল,আর উরিয়েল। আর আমরা যে লুসিফার দূতের নাম জানি উনি ছিলেন সিরাফিম গোত্রের। যাই হোক,আব্রাহাম,খ্রীস্টপূর্ব ১৯০০ অব্দে যিহুবার নির্দেশে ইহুদীদের কেনানে নিয়ে যায়। আদম থেকে শুরু করে মোশী সবাই কিন্ত স্বর্গের জন্য যিহুবার উপাসনা করত না ।তারা প্রার্থনা করত কেনান শহরে যেন তাদের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন যিহুবা, এই কারনে। কেনান পাবার লোভই ছিল যিহুবার কাছে ইহুদীদের মূল উদ্দেশ্য। আর এই কেনানই হল আজকের প্যালেস্টাইন। মিশর থেকে কেনানের পথে আসার সময় যিহুবার নিকট কিভাবে প্রার্থনা করতে হবে, সেটা শিখে ইহুদীরা।
আব্রাহামের মৃত্যুর পর,দাউদ,সোলমন ,আউল বিভিন্ন জন রাজা হয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইহুদীদের একাত্বতা রক্ষা করা যায় নি।খ্রীষ্ট পূর্ব ৭২১ সালে ইস্রায়েল রাস্ট্রের পতন ঘটে। খ্রীষ্টপূর্ব ১৯৮ সালে গ্রীকরা ইহুদী রাজ্য দখল নেয়। এবং সেই সময় ফরিশিদের মাধ্যমে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট সামহেড্রিক বা ধর্মীয় কাউন্সিল গড়া হয়। ৭০ সালে রোমান রা ইহুদি রাজ্য দখল করে। এবং ১৩৫ খ্রীস্টাব্দে তালমুদ নিষিদ্ধ করা হয়। যাই হোক ২২০ সালে ইহুদীরা তাদের ধর্ম গ্রন্থ লিপিবন্ধ করতে সক্ষম হয়। এমোরাইম নামের পন্ডিতরা এই ধর্মের বিধি নিষেধ তৈরী করেন। এবং সেই সময় থেকেই ব্যাপক ভাবে পৃথিবী ব্যাপী ছড়াতে থাকে ইহুদীরা।যিহুবা গড। যিহুবা গড এর ক্যারেক্টারটা অনেক টা দেবতার মত না হয় মানুষের মত। আমি আসলে এই যিহুবা গড নিয়ে লিখতে চাই নাই। তার কারন যিহুবা সমন্ধে লেখতে গেলে লেখা অনেক পর্বের হয়ে যাবে, তখন আর কেউ লেখাটা পড়তে চাইবে না।যাই হোক,আমি কেন ইহুদিদের প্রধান দেবতা বা ইশ্বর কে নিয়ে লিখতে চাই নাই এটার প্রধান কারন হল আমি অসভ্য, বর্বর আরব দেবতাদের নিয়ে লিখতে চাচ্ছি না।রাজা সোলায়মানের মৃত্যুর পর ইহুদি জাতী দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
এক অংশ ভাগ হয়ে হয় ইস্রায়েল আর অন্য অংশ হয় জুদিয়া। আর এই জুদিয়া অংশের ভাগ গুলো পরবর্তীতে আরব অঞ্চল গুলোতে ছড়িয়ে যায়। এবং তাদের দেবতাও চেজ্ঞ হয়। প্রধান দেবতা বা ইশ্বর হয়ে যায় হুবাল। যার আরেক নাম ইল্লাহ।বা আল্লাহ। এই আল্লাহ র আবার তিন মেয়ে ছিল। লাত, মানাত আর উজ্জা।এদের আবার জুদিয়া জাতী ( যাদের বেশীর ভাগ প্যাগান মতে বিশ্বাসী হয়ে উঠে) অনেক গুলো ভাগে ভাগ হয়ে যায়। আর বর্তমান মক্কায় তাদের প্রধান উপাশনালয় ছিল। এখানে বিভিন্ন গোত্রের বিভিন্ন মুর্তি ছিল। মোটামুটি প্রায় ৩৬০ টা মুর্তি ছিল। আপনারা কোরান পড়ে থাকলে শুরা তাওবার ১ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর পড়লে ব্যাপারটা বুঝে যাবেন।মক্কা বিজয়ের পর এই ৩৬০ টা মুর্তি ভেংগে ফেলা হয় শুধু মাত্র মা মারীয়া আর যীশুর মুর্তি ছাড়া। এই তথ্য পাবেন ইবনে ইসাহাকের সিরাত গ্রন্থে।যাই হোক আমি এই কারনে যিহুবা গড নিয়ে বলে সময় নস্ট করতে চাই নি। যিহুবার সমন্ধে বলতে গেলে এর সাথে রিলেটেট অনেক গডের নাম বলতে হবে।যাই হোক, আমি ভাই ইহুদীদের নিয়ে কথা বলছিলাম সেখানেই থাকি, আরবদের নিয়ে বলার তেমন আমার ইচ্ছা নেই। এক কথায় বলা যেতে পারে ইহুদীদের প্রাচীন নিবাস ছিল মধ্যপ্রাচ্য।এবং এই কেনান মানে প্যালেস্টাইনই ইহুদিদের প্রাচীন আবাসস্থল ছিল। অত্যন্ত পক্ষে প্রাচীন দলিল গুলো তাই বলে। বর্তমান সময়ে লেবানন, জর্ডান, মিশর,সিরিয়া এই বিশাল অঞ্চলে ইহুদিদের বাস ছিল। তবে আগেই বলেছি রাজা সোলায়মান এর মৃত্যুর পর ইহুদীরা ভাগ হয়ে যায় দুই ভাগে।
আর এই সুযোগে যে, যেভাবে পারছে ইহুদীদের নির্যাতন করছে।মার্চ , ৫৮৬ অব্দে এসে ব্যাবিলনীয়রা নির্যাতন শুরু করে। আবার পার্সিয়ানরা শুরু করে,এদের পর নির্যাতন করে হেলেনষ্টিকরা, রোমান রা,বাইজেন্টাইনরা, আরবরা, বৃটিশরা। মানে গত ৩০০০ বছর ধরে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ইহুদিরা। এর মাঝে কোন থামাথামি নাই। এক নাগাড়ে ৩০০০ হাজার বছর প্রায়। একটা একক জাতী এবং প্রাচীনতম জাতী এত বছর নির্যাতনের স্বীকার হয়ে এখন যদি পাল্টা আঘাত করে, তখনই ওই জাতী হয়ে যায় সন্ত্রাসী জাতী। এই ইহুদী জাতীকে অসংখ্য বার নিজের মাতৃভুমি থেকে উৎখাত করা হয়েছে।নিজেদের সাজানো সংসার, ভূমি , বাড়িঘর ছেড়ে এক যাযাবরের মত এখানে সেখানে ঘুরে বেরাতে হয়েছে।আর আজ যখন এই জাতী নিজের হারানো সম্পদ ফিরে পেতে চাইছে, তখন সেই জাতী হয়ে যাচ্ছে,সন্ত্রাসী জাতী। হ্যাসট্যাগে এই জাতীর বিরুদ্ধে নেমেছে গোটাপৃথিবীর মানুষ। হ্যা আমি স্বীকার করি এই জাতী আজ হিংস্র হয়ে উঠেছে, কারনটা হল যুগ যুগ ধরে চলে আসা নির্যাতনের কারনে।ইহুদিরা কি চায়? তারা চায় যিহুবা তাদেরকে যে দেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই দেশই তারা চায়। বাড়তি কিছু না।
ইউফ্রেডিস আর ট্রাইগ্রীস এই দুইটা নদীর মিলিত স্থান কে বলা হয় শাত ইল আরব। এবং আরব্য ইতিহাসে পাওয়া যায় এই দুইটা নদী বেহেস্ত থেকে এসেছে।৫৮৬ অব্দে ইহুদীরা ব্যাবিলনের আন্ডারে চলে আসে।এই ব্যাবিলনে অনেক গুলা বংশ শাসন করেছে। এর মধ্যে আছে খলদিয়ান বংশ (৬২৬অব্দ থেকে ৫৩৯ অব্দ).।আর্শিয়ান (৭৩২ অব্দ থেকে ৬২৬ অব্দ) ইলামেট বংশ ( ৯৮৪ থেকে ৯৭৯ অব্দ) এই রকমের প্রায় ১০ থেকে ১৪ টা বংশ ব্যাবিলন শাসন করে।তারমাঝে এই রকম প্রায় ৫ / ৬ টা বংশ ইহুদিদের শাসন করে।১৮৯৫ অব্দ থেকে ৫৩৯ অব্দ পর্যন্ত। তবে ইহুদিরা সবচেয়ে বেশী নির্যতনের স্বীকার হয় রাজা নেবুচাদ নেইজার এর সময়। এই তথ্যটা দিতে চাচ্ছিলাম না, বুঝার বা লেখার খাতিরে এই তথ্যটা আমাকে দিতে হচ্ছে।ইহুদী জাতীদের ভিতর এক ইশা নবীর আগমন ঘটেছিল উনি আমাদের যীশু খ্রীষ্ট নন।উনি ৭২৪ থেকে ৬৮০ পর্যন্ত দুই ইহুদি জাতীকে মিলানোর জন্য আপ্রান চেস্টা করেছেন। আস্যারিওরা খ্রীষ্টপূর্ব দশম শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যে এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। ৯১০ অব্দে তাদের হাতে ব্যাবিলনের পতন হয় এবং ৭৩২ অব্দে আস্যারিও সম্রাট তৃতীয় টিগলাথ এর হাতে সিরিয়ার পতন আর ৭২২ অব্দে আস্যারিও সম্রাট দ্বিতীয় সারাগনের হাতে ইস্রায়েলের পতন ঘটে। এবং তিনি চার ভাগের তিন ভাগ ইহুদিকে জোর পূর্বক ইহুদি দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।বার বার নির্যাতনের স্বীকার ইহুদীরা বুঝে যায়, তাদের দেবতা যিহুবা আসলে কোন কাজের দেবতা না।
যে দেবতা শুধু মাত্র প্যালেস্টাইন এর দেবতা। যে দেবতা শুধু প্রতিশ্রুতি দিতে পছন্দ করে।যে দেবতার প্যালেস্টাইন এর বাইরে কোন ক্ষমতা নেই।সমগ্র পৃথিবীতে উনার থেকেও বেশী ক্ষমতাবান দেবতারা আছে। তবে আস্যারিওরা ইহুদিদের এক অংশ দখল করলেও বাকী যে অংশ ছিল যুদা সেই অংশে যখন আস্যারিওরা আক্রমণ করল তখন ইহুদিরা ভাবল এইবার দেখা যাবে কে বেশী শক্তিমান। ইহুদিদের যিহুবা নাকি আস্যারিও দের দেবতা।তবে এই যুদ্ধে যুদা অংশ আস্যারিও কাছে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়। এবং দেবতা যিহুবার উপর ইহুদিদের আস্থা হারিয়ে যায়। আর এই সংকট মোকাবেলার জন্য জন্ম হয় ইশা মোশিহর। তবে তিনি আমাদের যীশু খ্রীষ্ট নন। তিনি ইহুদিদের মোশিহ।এই ইসাহ মোশিহ, ইহুদী জাতিকে বুঝাতে চেস্টা করেন যে এই যুদ্ধ আসলে যিহুবার সাথে অন্য কারো হয় নাই। কারন এই যুদ্ধে যিহুবা অংশগ্রহন করেন নি। কারন যিহুবা ইহুদিদের সাথে অভিমান করেছেন। তিনি প্রচার করেন যিহুবাই একমাত্র সত্যিকারের দেবতা। আর আস্যারিও দের তিনিই প্রেরন করেছিলেন ইহুদিদের সাজা দেবার জন্য।কারন ইহুদীরা তাকে দিন কে দিন ভুলে যাচ্ছিল। আবার তিনিই তার প্রতিশ্রুত জাতীকে উদ্ধার করবেন। তাদের দিবেন তাদের হারিয়ে যাওয়া কেনান দেশ। ইশাহ মোশিহ এর কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছিল। আস্যারিওদের সৈন্যদের প্লেগ রোগে বিশাল অংশ মারা যায়।আর আস্যারিওদের সম্রাট সিন্নেসেরাব মনে করেন ইহুদিদের নির্যাতন করার জন্য ইহুদি দেবতা তাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছেন। তাই তারা ইহুদি রাজ্য ছেড়ে পলায়ান করেন। এবং ইহুদিদের মাঝে আবার যিহুবার প্রতি বিশ্বাস বেড়ে যায়। পুনরায় তারা যিহুবার পূজা করা শুরু করে।যাই হোকএবার আসা যাক এবার আসা যাক খ্রীষ্টের সমসাময়িক ইহুদী জাতী কি রকম ছিল সেই বিষয়ে । ইতিহাস বার বার ফেরত আসে।যীশু খ্রীষ্টের জন্মের পর থেকে ১০০ বছর পর এই ইহুদীরাই খ্রীষ্টানদের উপর চরম অত্যাচার করেছে।যীশুকে বিনা দোষে ক্রুশে দিয়ে হত্যা করেছে।
যীশুর শিষ্যদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে।এর প্রতিদান কিন্তু ঠিকিই ইহুদিরা পেয়েছিল।তবে এই কথা সত্য,ইহুদিরা ও খ্রীষ্টানদেরদারা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিল। মধ্যযুগে ইহুদীদের ইউরোপীয় খ্রীস্টানরা সরাসরি ইহুদিদের যীশুকে হত্যার জন্য দায়ী করে।মধ্যযুগে জোর পূর্বক ইহুদীদের ধর্মান্তরিত করা হয়। ইউরোপে প্রায় সময়ই ইহুদীদের গনহত্যা করা হতো এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাসিত করা হত। রাইনল্যান্ড হত্যা এমনই একটি গন হত্যার নাম। জার্মান খ্রিস্টানদের দ্বারা ১০৯৬(প্রথম ক্রুসেড) খ্রীস্টাব্দে এই হত্যা কান্ড সংঘটিত হয়। কারন ক্রুসেডাররা বিশ্বাস করত ইহুদী জাতী যীশু খ্রীষ্টকে হত্যার জন্য দায়ী। ক্রুসেড হলো ধর্মযুদ্ধ। জেরুজালেম কে ঘিরে খ্রীষ্টান আর মুসলিমদের মাঝে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যাই হোক আমি ক্রুসেড নিয়ে সময় হলে অন্য কোন সময় লিখতে চেস্টা করব। তবে আমাদের এই দেশে ক্রসেড নিয়ে যেভাবে প্রচার করা হয় সেটা ৯৫% ই মিথ্যা। পিটার দ্য হার্মিট ছিলেন ইহুদি হত্যার মাষ্টার মাইন্ড। উনি একজন যাজক ছিলেন। ১০৫০ সালে উনার জন্ম আর ৮ ই জুলাই ১১১৫ অথবা ১১৩১ সালে উনার মৃত্যু হয়। ফ্রান্স এবং জার্মান থেকে আসা কৃষকরা নির্বিচারে ইহুদিদের হত্যা করে। ১১৪৭ সালে দ্বিতীয় ক্রুসেডের সময় ও ইহুদিদের উপর গনহত্যা চালানো হয়। ১২৫১ এবং ১৩২০ সালেও ইহুদিদের উপর হামলা করা হয়। ১৩৯৬ সালে প্রায় একলক্ষ ইহুদীকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করা হয়।
১৪২১ সালে অস্ট্রিয়া থেকে হাজার হাজার ইহুদিকে বহিষ্কার করা হয়। এই ইহুদিরা পোল্যান্ডে গিয়ে আশ্রয় নেয়। চর্তুদশ শতাব্দীতে এই মহামারী দেখা দেয়। যার নাম ছিল ব্যাক ডেথ মহামারী। এটার স্থায়ী কাল ছিল ১৩৪৬ থেকে ১৩৫৩ সাল পর্যন্ত। ৭৫ লক্ষ থেকে ২০ কোটি মানুষ মারা যায় এই মহামারীতে। এবং এই মহামারীর কারন হিসেবে ইহুদীদের কে দায়ী করা হয়ে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে শতাধিক ইহুদি গোত্রকে ধবংশ করা হয়। তবে পোপ ষষ্ঠ ক্লেমেন্ট ৬ ই জুলাই ১৩৪৮ সালে এক চিঠির মাধ্যমে আপ্রান চেস্টা করেছিল। কিন্ত উনার সেই চেস্টা ব্যর্থ হয়। ১৩৪৪ সালে স্ট্রাসবুর্গে ৯০০ জন ইহুদীকে পুড়িয়ে মারা হয়। ১১০০ সাল থেকে ১৬০০ সাল পর্যন্ত ইউরোপে ইহুদি নির্যাতন হত মারাত্নক পর্যায়ে। ১৬০০ সালের পর থেকে এই নির্যাতন কমতে থাকে। এবার যাই অন্য জায়গায়। সাল টা ৬২৭ খ্রীষ্টাব্দ। মাস জানুয়ারী মাস। এক ইহুদি গোত্রকে আরব রা অবরুদ্ধ করে রাখে ২৫ দিন। সকল প্রকার খাদ্য, পানীয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৬ তম দিনের মাথায় এক স্বীধান্ত হয়। ওই সম্প্রদায়ের সকল পুরুষদের হত্যা করা হবে। কোন পুরুষদের হত্যা করা হবে? যে সকল পুরুষদের গোপনঙ্গে চুল উঠছে তাদেরকে। আরবরা প্রতিটা পুরুষের গোপনাংগের চুল দেখে দেখে গলা কেটে হত্যা করে। ভোর বেলা শুরু হয় সেই হত্যা কান্ড, গলা কাটতে কাটতে সন্ধ্যা হয়ে যায়, তারপর মশাল জ্বালিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। যে ছেলের সবে মাত্র চুল উঠেছে, তাকেও হত্যা করা হয়।
মেয়েদের কে দাসীহিসেবে বন্টন করে দেওয়া হয়। আরবরা প্রতিজ্ঞাবন্ধ ছিল যে, ইহুদিদের আরব ভুখন্ড থেকে বিতাড়িত করা হবে। এবং হলোও তাই।৬৩২ সালের মধ্যে সমস্ত আরব থেকে ইহুদীদের বিতাড়িত করা হয়। সৌদি আরবে কেউ যদি গিয়ে থাকেন তাহলে সেখানে একটা অঞ্চল আছে,সেটার নাম ফ্যাদাক। মরু উদ্যান। এই ফ্যাদাক মরু উদ্যান ইহুদিদের ছিল। সেটাও কেড়ে নেওয়া হয়। এই রকম ছোট বড় অনেক অনেক অত্যাচার আরবদের দ্বারা ইহুদিরা হয়েছে।তাই ইহুদিরা বাধ্য হয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়। ইহুদিরা সর্বশেষ যে,গনহত্যার স্বীকার হয়, সেটা মূলত হয়, জার্মান নাৎসীদের দ্বারা। হিটলার মূলত এই হত্যা কান্ডের নায়ক ছিলেন। ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ষাট লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করা হয়। এই কাহিনী সবাই জানে বিধায় আমি দীর্ঘায়িত করছি না।ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে, গুলি করে ফাঁসী দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হত্যা করা হয়। অনেকে এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্ন হত্যার পথ বেছে নেয়। একের পর এক গন কবরে ইহুদিদের ঠাই হতে থাকে। আর এইভাবে শেষ হয় ইহুদি নামের এক জাতীর উপর নির্যাতনের গল্প। শত শত বছর ধরে এই জাতীকে পৃথিবীর মানুষ শুধু নির্যাতন ই করে গেছে।কয়েক হাজার বছর এই জাতীটা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত যাযাবরের মত ঘুরে বেরিয়েছে শুধুমাত্র একটু ভিটেমাটির আশায়। যদি বাইবেল কে সত্যি ভাবেন তাহলে আপনিও ইহুদিদের একজন। ইহুদি জাতীর হাজার বছরের নির্যাতন অবশ্যই আপনাকে ভাবাবে। ভুল যদি আমাদের পূর্ব পুরুষরা করেও থাকে আমরা কি সেই ভুল করতে পারি?
ইহুদিরা খ্রীষ্টানদের উপর নির্যাতন করেছিল,ইতিহাস এর পালটা প্রতিশোধ নিয়েছে।আরবরা ইহুদিদের নির্যাতন করেছিল আজ কি তাহলে ইতিহাস সেই নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে।যাই হোক লেখাটা শেষ দিকে নিয়ে যাই।চাকরী করতে হয় রোহিঙ্গাদের সাথে। বিশ্বাস করেন, এত জন্ম হার আর কোন জাতীর আছে কিনা আমি জানি জানি। সবচেয়ে বেশী জন্মহার এদের। ৩০ বছর বয়সের প্রত্যেটা ছেলের কমপক্ষে ৫ – ৬ টা বাচ্চা থাকে। আর বুড়া হতে হতে সেটা কোন কোন সময় ২০ পর্যন্ত পৌছে যায়। এরা খাবার দিয়ে মেয়ে মানুষের পেট ভরতে না পারলেও বাচ্চা দিয়ে ঠিকই পেট ভরায়। যাই হোক এই কথাটা বলার একটা কারন আছে,কারনটা হল কিছুদিন আগে ইস্রায়েল, ফিলিস্তনী যুদ্ধের খবরে দেখলাম হামাস জয়ী হয়েছে ইস্রায়েলের সাথে। বিজয় মিছিল করছে।টিনের চালে কাক, আমি তো অবাক। ২৪৫ জন মারা গেছে, ১০ হাজার বাড়ি ঘর ভেংগে চুরমার হয়ে গেছে।আড়াই হাজার মানুষ আহত।কয়েক লক্ষ ডলার ক্ষতি হয়েছে। পক্ষান্তরে ইস্রায়েল এর ১২ জন মারা গেছে,আর কয়েক টা বাড়ি ঘর ভাংগল। এরা কিভাবে হারল আমি বুঝি নি। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ৬০ লক্ষ ইহুদি মারা যাবার পর ও ইহুদিরা বিজয় মিছিল করেছিল কারন বাকীরা বেচে আছে।বেচে আছে দেখেই বিজয়ী হয়েছে।আসলে, প্রবল ক্ষমতাধরদের কাছ থেকে নিশ্চিত হার জেনে কোন রকম নেগোসিয়েশন হলেই অপেক্ষাকৃত কম শক্তিটির জন্য সেটাই জয়। তাই এই যুদ্ধে ইসরাইল হেরেছে, ফিলিস্তিন জিতেছে।যাই হোক কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় আসি।বলা হয় অটোম্যান কিন্ত সেটা অটোম্যান বা এটাকে বলা হয় ওসমানীয় খেলাফত। এদের সমদ্ধে বলতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে।
১৫১৭ সালের দিকে অটোম্যানরা ইস্রায়েল দখল করে নেয়। প্যালেস্টাইন, ইস্রায়েল, আরব্য উপদ্বিপ মোটামুটি সবই। এরপর থেকে প্রায় ৪০০ বছর পর্যন্ত অটোমানরা এই অঞ্চলটা শাসন করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪থেকে ১৯১৯) রুশ আর ব্রিটেন এর কাছে ধোলায় খেয়ে খেলাফত আমল শেষ হয়। ইস্রায়েল চলে যায় ব্রিটিশদের আন্ডারে। আর তখন থেকেই ইহুদীরা নিজেদের একটি দেশ তৈরীর স্বপ্ন থেকে। অবশেষে ১৯১৭ সালে ২ রা নভেম্বর ইহুদী নেতা ব্যারন রথচাইল্ড এর কাছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব আর্থার জেমেস বেলফার একটি চিঠি লেখেন। যেটা বেলফোর ঘোষনা নামে পরিচিত। এটি আসলে ইহুদী জাতীর আবাস ভূমির প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনের সমর্থন এর নিশ্চয় পত্র। যে ঘোষনা পত্র টি প্রকাশ করা হয় ৯ ই নভেম্বর ১৯১৭ সালে। বর্তমানের জাতিসংঘ, আগের নাম ছিল লীগ অব নেশন যা পরবর্তীতে ভেংগে যায়। সেখানে এটি গৃহিত হয়। কেন গৃহিত হয় জানেন? ২৭ শে নভেম্বর ১৮৭৪ সালে জন্ম নেয় এক জন মানুষ ইহুদী পরিবারে। উনার নাম ছিল ডক্টর চেইম উইজম্যান। উনি উন্নত ধরনের বিষ্ফোরক তৈরীর ফরমুলা আবিস্কার করেছিলেন। উইজন্টন চার্চিল ( যিনি একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি কিনা রাজনীতিবীদ হয়েও সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন) ততকালীন ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রী এই লোকটাকে ১৯১৬ সালে থেকে ১৯১৯ পর্যন্ত ব্রিটিশ এডমিরাল্টির গবেষনাগারের পরিচালক নিয়োগ দিয়েছিলেন ছিলেন। এই লোকটা চরম ইহুদীপন্থি ছিল।
এই লোকটার কারনে ব্রিটেন ইহুদী রাস্ট্র ঘোষনা দিতে বাধ্য হয়। চেইম উইজম্যানের বিষ্ফোরকের কারনে ব্রিটেন জিতে যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। অটোম্যান শাসন আমলে থেকে প্যালেস্টাইন ছিল অনুন্নত অঞ্চল এবং অনুর্বর। কিন্ত বেলফোর ঘোষনার পর ইহুদীরা দলে দলে নিজ ভূমিতে ফিরতে শুরু করে।এবং চড়া দামে ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে জমি কিনতে শুরু করে।আর লোভী ফিলিস্তিরা চড়া দাম পেয়ে সেই জমি বিক্রি করতে শুরু করে। এই জমি গুলোতে ইহুদিরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসল ফলাতে শুরু করে।আর শিল্প কারখানা গড়ে তোলে। উইজন্টন চার্চিলের বেলফোর ঘোষনার পরও উইজন্টন চার্চিল এই ঘোষনা বাস্তবায়ন করে নি। উনি প্যালেস্টাইন থেকে জর্ডানকে বাদ দেন আর জর্দান নদীর পূর্বের ৭৬% শতাংশ আরবদের আর পশ্চিম দিকের ২৪ % ইস্রায়েল কে দেওয়া হয়। এই অসম বন্টন ও কিন্ত ইহুদীরা মেনে নেয়। ২৪ % কেন ইহুদীকে কেন দেওয়া হয়েছে এই বিষয়টি আরবরা মেনে নেয় নি। ১৯২০ থেকে ২১ এ বারবার ইহুদীদের আক্রমণ করে।এবং অর্ধ শতাধিক ইহুদিকে হত্যা করা হয়। এই থেকে ইহুদিরা আত্নরক্ষার স্বীধান্ত নেয়। আর এই কারনে ইহুদী আর আরবদের অনেক গুলো দাংগা হয়। ১৯২৯ সাল পর্যন্ত এই দাংগা গুলো সংঘোটিত হয়ে থাকে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর, দলে দলে ইহুদিরা আমেরিকা,ইউরোপ থেকে আসা শুরু করে।আর আরবদের সাথে ইহুদিদের দাংগার পরিমান বাড়তে থাকে। তার জাতি সংঘ এই দুই জাতীর জন্য দুইটা রাস্ট্র বানানোর ঘোষনা দেয়। সবাই এই স্বীধান্ত মেনে নিলেও মাথামোটা আরবরা সেটা মেনে নেয় নি। ১৯৪৮ সালে ১৪ ই মে ইহুদি রাস্ট্র গঠন করা হয় আর ঠিক এই রাস্ট্র ঘোষনার এক ঘন্টা পরে আরবরা ইস্রায়েল আক্রমণ করে। কিন্ত এমন গো হারা আরবরা হারছে যে জাতিসংঘ যে ভুমি ইস্রায়েল কে দিয়েছিল, ইস্রায়েল সেটার থেকে বেশী জায়গা দখল করে নেয়,এবং ইস্রায়েলের সীমানা বৃদ্ধি করে ফেলে।
এর মাস্টার মাইন্ড ছিল ইস্রায়েলের প্রধান মন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিওন।এইবার আরবদের আম ও গেলে ছালাও গেলে। ওই দিন যদি আরবরা সেই প্রস্তাব মেনে যুদ্ধ না করত তাহলে আজ ফিলিস্তিনিদের এই অবস্থা হত না।বেজ্ঞামিন নেতাইয়ানহু, প্রায়ই বলে ভুল আরবরা করেছে,তাই তারা খেসারত দিচ্ছে।ইস্রায়েল সেই ভুল করবে না। ১৯৪৮ সালের ক্ষত মুছতে ১৯৬৭ সালে আবার আরবরা ইস্রায়েল আক্রমণ করে। মিশর, জডার্ন,সিরিয়া। এই যুদ্ধে ইস্রায়েল বিমান বাহিনীর কাছে খুব চরম ভাবে হারে আরবরা। মাত্র ৬ দিনে হেরে বিড়ালের মত লেজ গুটিয়ে পালায় আরবরা। আর ইস্রায়েল, সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মাল ভুমি আর মিশরের সিনাই পর্বত আর গাজা দখল করে নেয়। আর ইস্রায়েল জেরুজালেম কে রাজধানী ঘোষনা করে যদিও জাতিসংঘ সেটা মেনে নেয় নি।একটা জিনিস লক্ষ্য করবেন, ইস্রায়েল ডেম কেয়ার ভাবে চলে।জাতিসংঘ কি বলল না বলল সেটা এতটা মাথায় নেয় না। কারন ইস্রায়েল এর পিছনে আছে আমেরিকার মত শক্তিশালী রাস্ট্র।আর আমেরিকার সব বড় বড় বিজ্ঞানীরা হল ইহুদী বংশের। এই যুদ্ধে ইস্রায়েল জেরুজালেম এর ইহুদিদের অনেক পবিত্র জায়গা উদ্ধার করে নেয়। যেমন ট্যাম্পল অফ সোলমান, ওয়েন্টার্ন ওয়াল, দাউদের শহর। তবে এই যুদ্ধে ইস্রায়েল মিশর, আর সিরিয়ার দখলকৃত অনেক জমি ইস্রায়েল দখল করে নেয়। যাই হোক, লেখার শুরুতে রোহিঙ্গাদের কথা বলছিলাম কারন ফিলিস্তিনে জন্ম হার ৩.৬৪। কারন কি জানেন, এরা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অধিক বাচ্চার জন্ম দেয়। যেমনটা রোহিঙ্গারা মায়ানমার ফেরত যেতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি করছে যুদ্ধ করার জন্য।এত বড় লেখাটা পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Very nice Dada…