রুশ অর্থডক্স চার্চের দুইজন পুরোহিত।ছবি -দ্যা গার্ডিয়েন ।

                                         
৭ ই জানুয়ারী মোট খ্রিস্টানদের মধ্যে ১২ % খ্রিষ্টান আজ বড়দিন পালন করে।অর্থোডক্স চার্চ ২০০০ বছরের ঐতিহ্য বজায় রেখে ৭ ই জানুয়ারী পালন করে যিশু খ্রিষ্টের আগমন বার্তা।রাশিয়া, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন,গ্রীস সহ আরো অনেক দেশে ৭ ই জানুয়ারী পালিত হয় ,শুভ বড়দিন।

৩২৫ খ্রীষ্টাব্দে খ্রীষ্টান বিশপ গন এক সম্মেলনে মিলিত হয়।যা অনুষ্ঠিত হয় নিকায়া শহরে যা বর্তমানে তুরস্কে অবস্থিত। এই সম্মোলন ক্যাথলিক মন্ডলী তথা খ্রীষ্ট মন্ডলীর ইতিহাস কে এগিয়ে নিবার সম্মেলন। এই সম্মোলনে এমন কয়েকটি স্বীধান্ত হয় যা আজো পর্যন্ত ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। আর হাজার বছর ধরে আমরা তা মেনে আসছি। যদি কোন দিন সম্ভব হয় বা সময় হয় তাহলে অন্য একদিন এই সম্মেলন নিয়ে লিখবো। ওই সম্মেলন একটা স্বীধান্ত হয় যীশু খ্রীষ্টের জন্ম তারিখ সোসিজিন নামে এক জ্যোতিবির্দ কে নির্ধারন করার জন্য। উনি বাইবেলের গোস্পালের অনুযায়ী এবং জুলিয়ান ক্যালেন্ডার এর অনু্যায়ী ৭ তারিখ নির্ধারন করেন। কিন্তু ওনার গননা একটি সমস্যা ছিল।উনার সৌর বর্ষে ১১ মিনিট করে বাড়তি ছিল।সুতরাং ক্যালেন্ডার গুলার তারিখ নির্ধারনে, দিন নির্ধারন করতে সমস্যা হচ্ছিল।

সর্বশেষ, পোপ দ্বাদশ গ্রেগরি ১৫৮২ সালে, জ্যোতিষ বিদ দের আবার আমন্ত্রন জানায় এবং এবং নতুন এক ক্যালেন্ডার প্রননয় এর জন্য আহবান করেন। আজকে আপনারা যে থার্টি ফাস্ট করেন সেটি একজন খ্রীস্টান পোপ দ্বাদশ গ্রেগরীর অবদান। উনি না থাকলে আজকে এই থার্টিফাস্ট থাকত না। আর আমরা যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি সেটা হল গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার। যা পোপ গ্রেগ্ররীর নাম অনুসারে প্রচলন করা হয়।

পোপ গ্রেগরীর এই ক্যালেন্ডার সবাই মেনে নিলেও মেনে নেয়নি অর্থডক্স চার্চ। তারা পুর্বের ন্যায় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে খ্রিষ্ট ধর্মের নিয়ম, উৎসব পালন করার স্বীধান্ত নেয়। তারা গ্রেগরী ক্যালেন্ডার প্রত্যাখান করে পুর্বের ন্যায় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারে অটুট থাকে।এবং আজো পর্যন্ত তাদের স্বীধান্তে তারা অটুট আছে।

প্রায় কয়েক শতাব্দী ধরে এই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার এবং গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডারে এই ঝামেলা চলতে থাকে। অবশেষে ১৯২৩ সালে দেখা যায় এই দুই ক্যালেন্ডার এ প্রায় ১৩ দিনের পার্থক্য। এবং ২৫ তারিখে বড়দিন হয় গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার এ আর ১৩ দিন পর ৭ তারিখে হয় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।
এই সমস্যা থেকে উত্তোরন হতে ১৯২৩ সালে মে মাসে অর্থোডক্স নেতারা এক সম্মেলনে মিলিত হয়। কনস্টান্টিনোপল এ এক সম্মেলনে মিলিত হয়। সাইপ্রাস,রোমানিয়া,গ্রীস, রাশিয়া সার্বিয়া, এই সব অঞ্চলের প্রতিনিধিরা মিলিত হয়। এই সম্মেলনে রাশিয়ান চার্চ কে চাপ দেওয়া হয় গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার মেনে নেওয়ার জন্য। আরাম সারকিসিয়ান নামের এক ঐতিহাসিক লিখেছেন যে,এটি শুধু ধর্মের বিষয় ছিল না এটি ছিল সমাজন্ত্রকে বাচিয়ে রাখার যুদ্ধ ও বটে।

উক্ত সম্মেলনে সার্বিয়ান বিজ্ঞানী মিলটিন মিলানকোভিয়াস ( জন্মঃমে ১৮৭৯ মৃত্যুঃ ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৮)একটি সমাধান প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার এর এক নতুন সংস্করন করেন। সেটি পরে, রাশিয়া আর মিশর ছাড়া সব অর্থডক্স চার্চ মেনে নেয়। রাশিয়া আর মিশর এটা কে প্রত্যাখান করে।

৭ ই জানুয়ারী পালিত হয় ওদের বড়দিন।

পোপ ফ্রান্সিস রুশ ধর্মগুরু কিরিলের কিউবাতে মিলিত হবার ছবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *