সেন্ট ভ্যালেনটাইন

                                                 
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ১৪ ই ফেব্রুয়ারী। এই দিন টি প্রেমিক প্রেমিকাদের কাছে একটি বিশেষ দিন। বিশ্ব ব্যাপী বিপুল উৎসাহ উদ্দিপ্পনার মধ্যদিয়ে পালিত হয় হয় এই ভালোবাসা দিবস। অবশ্য অনেক দেশ এই ভালোবাসা দিবস কে আবার নিষিদ্ধ ও করেছে। এদের কাছে ভালোবাসা দিবস ভালো না। এই যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালোশিয়া, পাকিস্তান সৌদি আরব, ইরান এমন কি ইন্ডিয়া। যদিও ইন্ডিয়া তে এর নিষিদ্ধ এর প্রভাব তেমন পরে না কিন্তু অন্য দেশ গুলাতে রীতিমত শাস্তি দেওয়া হয় এই দিবস টি পালনের জন্য। তবে বাংলাদেশ এ এর আগমন হয়েছিল যায় যায় দিন এর সম্পাদক শফিক রেহমানের হাত ধরে। প্রথমে ছোট পরিসরে হলেও এর আকার এখন পুরো বাংলাদেশে বিস্তৃতি লাভ করেছে।প্রথমে শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রিক ছিল এই ভ্যালেন্টাইন ডে।আর এখন যে পরিমান ফুল বিক্রি হয় সারা দেশে, সারা বছরে তার চার ভাগের এক ভাগ হয় এই ভ্যালেন্টাইন ডে।কেন, কিভাবে এর প্রচলন হয় তার জন্য অনেক মতামত থাকলেও সবচেয়ে গ্রহন যোগ্য মতামত হচ্ছে এক খ্রিস্টান ধর্ম যাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্নত্যাগ। আজকে উনাকেই নিয়ে কথা বলব।


সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জন্ম ইটালীর টেরনী শহরে ২২৬ খ্রিষ্টাব্দে।উনি একজন ধর্ম যাজক ছিলেন এবং অনেকে সোর্স বলে যে, উনি একজন বিশপ ছিলেন। এবং তিনি প্রবল ভাবেই খ্রীষ্ট ভক্ত ছিলেন। উনি বিশ্বাস করতেন , ভালোবাসার মাধ্যমে সব জয় করা সম্ভব।তত কালীন রোমান সম্রাট, যার নাম ছিল ক্লাডিয়াস গথিকাথ বা দ্বিতীয় ক্লাডিয়াস তিনি একটি আদেশ জারী করেন যে যুবকদের বিয়ে করা যাবে না। কারন উনার ধারনা ছিল যে যুবক রা বিয়ে করলে যুদ্ধে যেতে চাই বে না। ওই সময় রোমান সম্রাজ্ঞ্য বৃদ্ধি করার জন্য রোমান দের যুদ্ধ করতে হত । সম্রাটের এই আদেশের কারনে ততকালীন যুবক রা বিয়ে করতে পারছিল না। চার্জ গুলোর উপরে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছিল চার্চ গুলোকে। যদিও দ্বিতীয় ক্লাডিয়াস খ্রীষ্টান ছিলেন না এবং খ্রীষ্টান দের অত্যাচার করত। মোটামুটি নিষিদ্ধ ছিল খ্রীষ্ট ধর্ম। অনেকটা গোপনে চলত খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার। সম্রাটের এই আদেশ মেনে নেয় নি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। তিনি গোপনে যুবক যুবতীদের বিয়ে দিতে লাগলে ন। এবং তিনি খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচারের কাজ চালিয়ে যেতে লাগলেন। অবশেষে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কে বন্ধি করা হয়। বিচারক অস্ট্রেরিয়াস এর আদালতে উনার বিচার শুরু হয়।

উনি বিচারকে খ্রীষ্ট ধর্ম সমন্ধে অনেক আলোচনা করলেন এবং বিচারক কে তার বিশ্বাস সমন্ধে অবগত করলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। তারপর পর ও তিনি খ্রীষ্ট ধর্ম ত্যাগ করেন নি। বিচারক অস্ট্রেরিয়াসে এক জন দত্তক নেওয়া মেয়ে ছিল। মেয়েটি প্রায় ই সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর কাছ থেকে খ্রীষ্ট ধর্ম সমন্ধে জানতে চাইত, এবং ভ্যালেন্টাইনের উপদেশ শুনতে। যদিও মেয়েটি ছিল জন্মান্ধ।বিচারক অস্টেরিয়াস ভ্যালেন্টাইন কে,তার বিশ্বাসের পরীক্ষা নির্দশন হিসেবে তার অন্ধ মেয়েকে ভালো করে দিতে বললেন। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির চোখে হাত রেখে আর্শীবাদ করলেন এবং মেয়েটি সম্পুর্ন দেখতে পেল।বিচারক এই ঘটনা দেখে, আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলে এবং উনার পরিবারের ৪৪ জন এক সাথে দীক্ষাস্নাত হয়ে ছিলেন। ভ্যালেন্টানের কথা মত সকল খ্রীষ্টান দের, যাদের ধর্ম বিশ্বাসে জন্য বন্ধি করা হয়েছিল তাদের সবাই কে মুক্ত করে দিলেন। এবং অনেক রোমান দেব দেবীর মূর্তি ভেংগে ফেলেন। এবং সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কে মুক্ত করলেন। সম্রাট দ্বিতীয় ক্লাডিয়াস ( জন্মঃ১০ মে ২১৪ মৃত্যঃজানুয়ারী ২৭০ খ্রিষ্টাব্দে) সেন্ট ভ্যালেন্টান কে আবারো গ্রেফতার করেন। সেন্ট ভ্যালেন্টান সম্রাট কে খ্রিষ্ট ধর্মের অনেক বিষয় বুঝাচ্ছিলেন। সর্ব শেষ যখন সম্রাট কে খ্রীষ্ট ধর্ম এ দীক্ষিত হতে বললেন তখন অনুরোধের জন্য সম্রাট সেন্ট ভ্যালেন্টান কে ক্লাব দিয়ে পিটিয়ে এবং গলা কেটে হত্যার নির্দেশ দেন। কথিত আছে যে বিচারকের মেয়েকে উনি অন্ধত্ব থেকে বাচিয়ে ছিলেন, উনি সেই মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন। উনাকে হত্যা করার সময় একটি চিঠি লিখেছিলেন, “উইথ লাভ,ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন “।সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কে ফ্লামিনিয়ান গেটের বাইরে ১৪ ফ্রেবুয়ারী ২৬৯ খ্রীষ্টাব্দে গলাকেটে হত্যা করা হয়। প্রথম পোপ জেলাসিয়াস ৪৯৬ খ্রীষ্টাব্দে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কে শহীদ হিসেবে ঘোষনা করেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারী কে ভ্যালেন্টাইন হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেন। সেই থেকে আজ অব্দি ১৪ ফ্রেবুয়ারী ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে পালন করা হচ্ছে। লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বলব With love, from your valentine.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *