বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য আজো দাাঁড়িয়ে বেলুচরা।
বিশ্বাস করেন পাকিস্তান নামটা শুনলেই কেন জানি আমার মন থেকে ঘৃনা জন্ম নেয়। এই দেশটাকে কোন দিন ও কোন কিছুতেই সাপোর্ট করি না।এর পতন দেখতে খুব ভাল লাগে। এবং সামনে বেলুচদের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত পতন হবে, এই আশায় রইলাম।
১৯৪৭ সালের পর থেকে শুধু মাত্র যে শুধু আমাদের বাংলা দেশের পাকিস্তানিদের সাথে বিবাধ ,বিরোধ চলছিলো ,তা কিন্তু নয় ।পাকিস্তানীদের সাথে বিরোধ আরেক টি অঞ্চলের মানুষের সাথে ১৯৪৮ সাল থেকে ।যার নাম বেলুচিস্তান ।ওদের আফসোস ওদের একজন শেখ মুজিবর রহমান নেই ,আমাদের সৌভাগ্য আমারা পেয়েছি একজন মহান নেতা কে ।যার জন্য আমরা আজ ৫০ বছর হতে চলল আমরা স্বাধীন ।বেলুচিস্তান একটি অভাগা অঞ্চল ,যার কথা বিশ্ব কোন দিন জানতে চায় না কিংবা পাকিস্তান জানতে দেয় না ।যে নির্যাতন ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত আমাদের সাথে করা হয়েছে তার থেকে অনেক বেশী এখন পর্যন্ত করা হচ্ছে বেলুচদের সাথে ।বেলুচদের কান্না পাকিস্তান নামক দেওয়ালের বাইরে বের হয় না ।
স্বামীর খোজে এক বেলুচ নারীর আর্তচিৎকার।
বেলুচিস্তান বেলুচিস্তান দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি প্রদেশ। ভৌগোলিক দিক থেকে পাকিস্তানের বৃহত্তম এই প্রদেশটির আয়তন ৩,৪৭,১৯০ বর্গকিলোমিটার এবং এটি পাকিস্তানের মোট আয়তনের প্রায় ৪৮% গঠন করেছে। বেলুচি জাতির লোকদের নামে অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়েছে।এর লোক সংখ্যা প্রায় ৮০লক্ষ।
যেভাবে পাকিস্তানের অংশ হয় বেলুচিস্তানঃ
১৮৩৮-১৮৪২ সালের প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে ব্রিটিশরা অঞ্চলটি দখলে নিয়ে নেয়। ১৮৪১ সালে তারা সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। ১৮৭৭ সালে পাঁচটি জেলা নিয়ে ব্রিটিশ ভারতের বেলুচিস্তান প্রদেশ গঠন করা হয়।এবং পরবর্তীতে কালাত চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয় বেলুচিস্তান।
কি ছিল কালাত চুক্তিতেঃ
কালাত চুক্তিতে কেবল প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি- ইসলামাবাদের হাতে থাকার কথা ছিল। বাকি বিষয়গুলো বেলুচিস্তানের শাসকদের ওপর ন্যস্ত রাখা হয়।১৯৪৮ সালে জিন্নাহ সাথে কালাত চুক্তি হয় যা পরবর্তীতে পাকিস্তানিরা মেনে নেয় নি ।বেইমান জাতী যেমন টা করেছিল বাংগালীদের সাথে ।বিশ্বাস ঘাতকতা ,বেইমানী পাকিস্তানীদের রক্তের সাথে মিশে আছে।এর থেকে এরা কোন দিনও বের হতে পারে নি।
৭১ এর বাঙ্গালীদের মত একই নির্যাতন করা হচ্ছে বেলুচদের।
বেলুচদের কালো অধ্যায়ঃ
আমি আমার বাবা জেঠাদের কাছ থেকে শুনেছি কি ভাবে পাকিস্তানীরা আমাদের নির্যাতন করত।আমার দুই জেঠা মুক্তি যোদ্ধা ,শুনেছি কি ভাবে তারা যুদ্ধ করত ।কি পরিমান কস্ট সহ্য করতে হয়েছে ওনাদের। ৭১এর নির্মম অত্যাচার আজো লক্ষ লক্ষ বাংগালীর মনের মাঝে গেথে আছে ।যাই হোক কালত চুক্তির পর ,পাকিস্তানীরা তাদের কথা রাখে নি ।নির্মম অত্যাচার শুরু হয় বেলুচদের উপর ।পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ নিয়ে আসা হয় বেলুচিস্তানে ।পাকিস্তানের মোট ভু খন্ডের ৪০ শতাংশ হল বেলুচিস্তানের ।এখানে বেলুচদের সংখ্যা মাত্র ১০ লক্ষ ।বাকিরা অন্যনা অঞলের ।এভাবে বেলুচদের সংখ্যা লুঘু করা হল । ২০বছর পর কাস্মীরা যেভাবে সংখ্যা লুঘু হবে।কাস্মীর নিয়ে পরে একসময় লিখার ইচ্ছে আছে ।শিক্ষা ক্ষেত্রেও বেলুচিস্তান পিছিয়ে ,যেখানে৬০ শতাংশ পাকিস্তানে ১০৯ টা মেডীক্যাল কলেজ আছে সেখানে বেলুচদের আছে ৫ টা ।যেখানে মোট পাকিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয় ১৬৮ টি বেলুচদের আছে মাত্র ৬ টি।বেলুচদের শিক্ষিত হতে দেওয়া হচ্ছে না ,যেমন টা আমাদের দেওয়া হয়নি ।
বেলুচিস্তান পাকিস্তান নয়
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রতিবারই বেলুচ স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর নির্মম দমননীতি প্রয়োগ করেছে। খোদ পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার হিসাবে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার বেলুচিস্তানের মানুষ হারিয়ে গেছে। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা যায়, গড়ে প্রায় প্রতিটি বেলুচ পরিবারের একজন করে মানুষ গুম হয়েছে। কেবল গ্রাউন্ডে সেনা পাঠিয়ে নয়, আকাশ থেকেও বেলুচ স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর হামলা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও বেলুচদের মধ্যে যত মিলঃ
পাকিস্তানের ১৭ % গ্যাসের যোগান দেয় বেলুচিস্তান ,ব্যবহারে সু্যোগ পায় ৪%।পাকিস্তানের খাদ্য ভান্ডার পরিপূর্ন করছে করছে বেলুচিস্তান ,অথচ বেলুচরাই খাবার পায় না ।বেলুচিস্তানের বেকারত্বের হার পাকিস্তানের অন্য যে কোন অঞল থেকে বেশী।প্রশাসনে হাতে গোনা কয়েক জন ছাড়া বেলুচদের কেউ নেই ।পাকিস্তান সরকার বেলুচদের সর্বচ্চো মহলে দেখতে মোটেও চায় না ।বেলুচদের যে পরিমান প্রাকৃতিক সম্পদ আছে ,তা হরি লুট করে খাচ্ছে পাকিস্তানি তথাকথিত সরকার,যারা আসলে সেনা বাহিনীর হাতের পুতুল মাত্র । বেলুচিস্তানের স্বর্ণের খনিগুলোও অব্যবস্থাপনার মতো নানা অজুহাতে প্রাদেশিক সরকারকে নিষ্ক্রিয় করে পাকিস্তানের এলিট সম্প্রদায় হাতে নিয়েছে। চীনের কোম্পানিগুলো স্বর্ণ উত্তোলনের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বেলুচিস্তানের চাগাই জেলার রিকু ডিকের মতো ছোট শহরটিতেই প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের দামের স্বর্ণ ও তামা জাতীয় সম্পদ রয়েছে। একই জেলায় আরেকটি ছোট শহর সেইনডাকেও স্বর্ণ ও তামার মজুতের পরিমাণ শত বিলিয়ন ডলার মূল্যেরও বেশি। বেলুচের এই মূল্যবান সম্পদ আরোহণের দায়িত্বে রয়েছে চীনা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিগুলো।তারমানে বুঝা যাচ্ছে পাকিস্তান চীনের হাতের পুতুলে পরিনত হচ্ছে।পাকিস্তানের এখন বৈদশিক ঋনের পরিমান ১০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।আর অভ্যন্তরীন ঋন ২০ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানী রুপি।মোট জি ডি পি ৩.৭%।বেশীদিন নাই পাকিস্তানী রাস্ট্রের ধবংশের ।
বেলুুুুুচদের মুক্তি বাহিনী
যা হতে পারে সামনেঃ
১.তালেবান রা যদি নির্মুল না হয় তাহলে আফগানিস্তানের পশতুনরা আর বেলুচিস্তানের পাঠানরা এক হয়ে ভবিষ্যতে একটি পশতু রাষ্ট্র গঠন করতে পারে।
২.ইরানের বেলুচিস্তানেকে সাথে নিয়ে আলাদা বেলুচ রাস্ট্র হবার সম্ভাবনা থাকে ।
৩.ভারত ,আমেরিকার ,আফগানিস্তান এই তিন দেশের মাধ্যমে স্বাধিনতার স্বপন দেখতে পারে বেলুচিস্তান ।
বেলুচদের দরকার একজন বঙ্গ বন্ধুঃপাকিস্তান বেলুদের এত নির্যাতন করার পর ও কেন বেলুচ রা কিছু করতে পারছেনা ,তার এক মাত্র কারন হচ্ছে বেলুচদের এক জন বঙ্গ বন্ধুর বড়ই অভাব ,বাংগালী জাতিকে তিনি তার প্রবল দুরদর্শিতা দিয়ে ,সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংগালী জাতীকে স্বাধীন করেছিলেন ,পক্ষান্তরে বেলুচদের কেউ নেই ।যেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে ,পাক বাহিনী তাকেই হত্যা করেছে।
শেষ কথাঃ
বেলুচদের স্বাধীনতা এখন শুধু মাত্র সময়ের ব্যাপার মাত্র।যেদিন একজন বেলুচ বন্ধু বেলুচিস্তানে জন্মাবে ,সেদিন বেলুচিস্তান স্বাধীন হবে।
বঙ্গবন্ধু, শেখ মুজিবর রাহমান