তাজমহল এবং শাহজাহানের ছবি।

আমি যারা এই লেখাটা পড়বেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই আমি এই লেখাটা ইচ্ছে করেই শেষ করি নাই। এখানে যা বলা হয়েছে সব গুলাই দাবী। এটা কেউ বিশ্বাস করতে ও পারেন আবার না ও করতে পারেন। তবে একান্ত কৌতূহল বশত কেউ যদি শেষ টা জানতে চান, তাহলে মেসেজ করতে পারেন।আমি উওর দেবার চেস্টা করব।আমার অনেক গুলো নামে এলার্জি আছে,যেমন টিপু সুলতান,চেঙ্গিস খান,আরঙ্গজেব,তৈমুর লং।এদের নামে ইমারত বা রাস্তার নাম কেন হবে।এরা তো হাজারে হাজারে মানুষ কে হত্যা করেছে শুধু মাত্র ভিন্ন মতের কারনে।তৈমুর লং নাকি খোড়া পায়ে বিশ্ব বিজেতা।ভাল কথা, ভাই আপনাকে কে বলছে খোড়া পায়ে যুদ্ধ করতে।কয়েক লক্ষ মানুষ কে হত্যার জন্য দায়ী এই প্রানী।একে আবার মুকুট পরানো হয় বিশ্ব বিজেতার । যাই হোক, কথা না বাড়িয়ে, যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা শুরু করি।

এই পোস্ট টা করার আগে বার বার চিন্তা করছিলাম অনেক অনেকের কথা বলবে।গালি গালাজ ও করতে পারে ।তবে আমি যুক্তি দিয়া চিন্তা করতে জানি ।রেফারেন্স দিয়ে কথা বললে আমার ও শিখতে আপত্তি নেই ।তাজ মহল নিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে সর্ব প্রথম যে নামটা আসে তা হল শাহজাহান ।সর্ব প্রথম আমরা শাহজাহান নিয়ে আলোচনা করি ।কে এই সম্রাট শাহজাহান?

তাজমহল এবং মমতাজ।

তিনি ছিলেন মোঘল সম্রাজের ৫ ম সম্রাট।প্রকৃত নাম শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ খুররম ।জন্ম ৫ জানুয়ারী ১৫৯২ মারা যান ২২ শে জানুয়ারী ১৬৬৬ সালে ।উনার স্ত্রীর সংখ্যা ছিল সর্বমোটে ১১।আমার কাছে কম ই মনে হয় ।কিন্তু উনার হেরেমে দাসীর সংখ্যা ছিল ৪০০০ থেকে ৫০০০ ।দাসী কিসের জন্য সেটা না হয় নাই বললাম ।এখন প্রথম প্রশ্ন তো এই জায়গায় ই জাগে সখি ভালোবাসা কারে কয় ।এত গুলা বিবি ,উপপত্নী ,দাসী রেখে মমতাজের দিকে তাহার এত খেয়াল কিসের জন্য ?ধরে নিলাম বাল্য কালের প্রেম ছিল ,তাই এত মোহাব্বত।এত প্রেম যখন তাহলে একটাই বিয়ে করত ,জনে জনে ভাল বাসার দরকার কি ছিল? মমতাজ কিন্তু শাহজাহানের তিন নম্বর বিবি ছিল ।উনাদের বিয়ে হয় ৩০শে এপ্রিল ১৬১২ সালের আগ্রাতে ।শাহাজাহান পরের বিয়ে করেন আইজুন নেসা বেগমকে ২ রা সেপ্টেমর ১৬১৭ সালে ।মানে কি ভাই ।এত ভালবাসার মানুষ কে কাছে পেয়ে আবার আরেক জনকে বিয়ে ?এবং মমতাজ মরার পর তিনি আবার ও বিয়ে করেন ।হায়রে ভালবাসা ।

এবার দ্বিতীয় আলোচনা করা মমতাজ কে নিয়ে ।উনার জন্ম ২৭ শে এপ্রিল ১৫৯৩ এবং মারা যান ১৭ ই জুন ১৬৩১ সালে ।উনার আসল নাম আনজুমান বানু বেগম ।কথিত আছে মমতাজ উনার পুর্বের স্বামীর মৃত্যর পর শাহজাহান কে বিয়ে করে ।(আমি এই তথ্যটা তত বেশি গ্রথন যোগ্য মনে করিনা)।যাই হোক মমতাজ মারা যায় সম্রাট শাহজাহানের ১৪ নম্বর বাচ্চার জন্ম দিতে গিয়ে ।প্রায় ৩০ ঘন্টার প্রসব বেদনা সহ্য করে ।এইবার বুঝতে পারলাম শাহজাহানের ভালবাসা ১৬১৭ থেকে ১৬৩১ ,১৪ বছরে ১৪ টা।কঠিন ভালবাসা।

শাহজাহান আর মমতাজ বেগমের ছবি ।

এবার আসল আলোচনা করি,তাজমহল নিয়ে ।বলা হয়ে থাকে তাজমহল নির্মান কাজ শেষ হয় ১৬৩২ থেকে শুরু করে ১৬৫৩ সাল ।(অনেকে বলে১৬২৮ থেকে ১৬৫৮ )।এর স্থাপন কারী হিসেবে যার নাম বলা হয় ,তার নাম ওস্তাদ ইসা সিরাজি ।যার জন্ম হয় পারস্যে।এবার একটা বিষয় লক্ষ্য করি উনি ওনার নিজের এলাকায় তেমন কিছুই বানায় নাই।রাস্তা থেক কাউকে উঠিয়ে কি করনার প্রতিশেধক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে ।যিনি নিজের এলাকায় ই প্রসিদ্ধ না ,উনাকে দেওয়া হল এত বড় একটা দায়ীত্বে।কেমনে সম্ভব ।বড় জোর কোন বিল্ডিং এর রঙ টং করানোর কাজ পেতে পারে ,তবে কি তাই হয়েছিল?মমতাজ মারা যাবার পরে কিন্তু মমতাজকে ১৭ ই জুন ১৬৩১ সালের বোরহানপুরে .২০মাস পরে নাকি উনার লাশ তাজে স্থানান্তর করা হয়ে থাকে । তাহলে কি ২০মাসে তাজ নির্মান শেষ হয়ে গিয়েছিল?সম্রাট শাহজাহানের আত্নজীবনী গ্রন্থের নাম বাদশা নাম ।যার লেখক আব্দুল হামিদ লাহোড়ি।তারে এই বাদশা নামা বইটাতে কিন্তু এই তাজমহলের ব্যাপারে বিস্তারিত নেই ।এত বড় একটা নির্মান ,কেমনে কি?১৬৩৮ সালের দিকে এক ফরাশি পর্যটক ভারত সফরে আসেন তিনিও কোথাও তার বইতে তাজমহলের নাম লেখে নি।অথচ যা লেখার দরকার ছিল।এখানে আরেকটা বিষয় বাদশা নামাতে আব্দুল হামিদ লাহড়ি দাবি করেন এই মহল বানাতে খরচ হয়েছে ৩০লক্ষ টাকা ,কিন্তু দুশ বছর পর দাবি করা হয় ৯ কোটী টাকা ।কার টা মানা বেশি যুক্তিযত ।আর ৩০লক্ষ টাকা দিয়ে কি তাজের মত স্থাপত্য নির্মান করা সম্ভব?এবার আরেটা কথা বলি তাজমহলের ভিতর কিন্তু একার মমতাজের কবর নাই ,আর দু জনের আছে ।এক জন হল শাহজাহানের আরেক স্ত্রী ,আর মমতাজের এক জন দাসীর ।এই ছিল শাহজাহানের ভালবাসা?হায়রে ভালোবাসা।

শাহজাহান আর মমতাজের তথাকথিত প্রেমের ছবি ।

এবার একটা উক্তি হুবুহু তুলে ধরছি;একটি আমেরিকান ল্যাবরেটরী দ্বারা কার্বন 14 পরীক্ষায় এবং নিউ ইয়র্কের প্র্যাট স্কুল অফ প্রফেসর কর্তৃক প্রবর্তিত তেজের নদী প্রান্তের একটি কাঠের টুকরাটি প্রকাশ করেছে যে শাহজাহানের চেয়ে 300 বছরের পুরনো দরজাটি দাড়িয়েছে। 11 শতকের পর থেকে বারবার আগ্রাসীদের দ্বারা তাজতের দরজাগুলি ভেঙ্গে যায়, সময়-কাল পরিবর্তিত হতে থাকে। তাজ মসজিদটি অনেক পুরানো। এটি 1155 এডি এর অন্তর্গত, যথা, শাহজাহানের প্রায় 500 বছর আগের।কি বুঝলেন?————————————————————————————-এবার আরো প্রশ্ন ছিল আজ্ঞুমান বানু।সম্রাট উনার নাম দেন মমতাজ।এখন কথা হলো গিয়ে নামের প্রথম দুই শব্দ বাদ দিয়ে লাস্টের দুই শব্দ কেন লাগানো হল।তাজ মহলের নাম হবার দরকার ছিল মম মহল ।দ্বিতীয়ত ,সম্রাট শাহজানের পর থেকে তাহমহলের ৭ টি দরজা কোন দিন খোলা হয় নি।কি আছে এর ভিতরে?তৃতীয় ত,মুসলিম স্থাপত্য রীতিতে কোন কবর খানার ভিতরে হোটেল এর মত সরাইখান ,গোছল খানা থাকা বিরল ,যা সব ই আছে তাজের ভিতরে ।

এবার লেখাটা শেষ করব ,কয়েকটা হিনডস দিয়া ।রাজা জয় সিং ।উনি একজন রাজ পুত।এবং মান সিং এর নাতী ।মান সিং ছিল আকববের এক জন নব রত্ন ।জয় সিং।এই গল্পের খুবই গুরত্ব পুর্ন ব্যক্তি।উনাকে নিয়ে জানলে আপনি তাজমহলের ইতিহাসটা জেনে যেতে পারেন।আজ এই পর্যন্ত ।কাল আবার নতুন বিষয়ে লিখতে পারি ।লেখাটার পক্ষে বিপক্ষে অনেক মতামত থাকতে পারে।যুক্তি দেন,আলোচনা করুন,প্লিজ গালি গালাজ করবেন না।

তাজমহল কি প্রেমের ফসল নাকি ক্ষমতা অপব্যবহারের?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *