সত্যি কথা বলতে কি, আমি অভিশাপ টভিশাপ এ বিশ্বাস করি না।কিন্ত কোন কিছু হলে কিছু কিছু মানুষ সেটাকে অভিশাপ কিংবা গজব বলে চালিয়ে দিতে চেস্টা করে।যেমন ধরেন, ফ্রান্সে গির্জায় আগুন লাগা কিংবা বন্যায়, বৃষ্টিতে,তুষারপাতে মানুষ মারা যাওয়া কে অভিশাপ বলা শুরু করে।পন্য বয়কট করে,এম্বাসী ঘেরাও আর কত কি যে দেখলাম এই দেশে।ইস্রায়েলে কিছু হলে তো কথাই নাই।মিষ্টি বিতরন শুরু হয়ে যায় আমাদের দেশে।অথচ ১৯৭২ সালে ফ্রেবুয়ারী মাসে বাংলাদেশ কে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিল। বীর বাংগালী সেদিন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।ভাল কথা, করতেই পারে।যারে, দেখতে না পারে তার হাটার স্টাইল ভালো না।এত দিন পার্সপোটে লেখা থাকত ইস্রায়েলের যাওয়া যাবে না এখন সেটা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।তারপরও আপনি ইস্রায়েল যেতে পারবেন না।গেলে সাজা।সাজা ই যদি দিবেন,তাহলে না ঊঠাইলে ই পারতেন।একজন খ্রীষ্টান ব্যাক্তির কাছে ইস্রায়েল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। একজন খ্রীষ্টান ইউরোপ আমেরিকা থেকে ইস্রায়েল যেতে বেশী সাছন্দ বোধ করবে।কিন্ত সেটা সম্ভব না।নিমন্ত্রন দেওয়া হইছে কিন্ত খাইতে গেলে বেধরক পিটানো হবে।যাই হোক, এককথা থেকে অন্য কথায় চলে যাচ্ছিলাম।আমার একটা বিষয়ে প্রচন্ড পরিমান এলার্জী আছে।সেটা হল,যে বা যারা কিংবা কোন দেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদের নিয়ে।পাকিস্তান, আমার কাছে সবসময় ই আবর্জনা যুক্ত দেশমনে হয়।এই দেশ টাকে কোন ভাবেই কোন কালেই আমি সাপোর্ট করি না।আর এরা আহামরী এমন কিছুই করে নাই যে এদের সাপোর্ট করতে হবে।আমি এই দেশ টাকে ডাস্টবিন বলে থাকি।ইদানীং আরেক টা দেশ হল, তুরস্ক।এরা সব সময় ই বাংলাদেশের বিরোধিতা করে।আমাদের দেশের যুদ্ধ অপরাধের বিচার হবে তোদের এত মাথা ব্যাথা কেন রে।কিসের কি বিবৃতি দেয়,পারমিশন ছাড়া আদালতে ঢুকে। আর এদের নতুন খলিফার কথায় কথায় অনেকের চীড়া ভিজায়ে ফেলে। তুমুক করব,অমুক করব, হাতী ঘোড়া সব মেরে ফেলে। অথচ নিজের দেশ ই ঠিক নাই।যাচ্ছে তাই অবস্থা। এরদোগানের এতই জনপ্রিয়তা যে ইস্তাম্বুল, আংকারা,ইজমির,এন্টালিয়া চার টা শহরের নির্বাচনে গো হারা হারলো।তারপর আবার নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে সেই ভোট বাতিল ও করল।বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ,গাজীপুর,সিলেট,চট্রগ্রাম,বরিশালে হারছে কই উনি তো সেই গুলা বাতিল করে নাই। কিন্ত এরদোগান সাহেব ক্ষমতা বলে বাতিল করল।
এরদোগান সাহেব হাজার বছরের পুরাতন গীর্জাকে মসজিদ বানিয়ে দিলেন শুধু মাত্র ভোটের জন্য।তারপর ও কি এরদোগান সাহেব মানুষের মন পেয়েছেন। চলেন একটু কিছু পরিসংখ্যান দেখি।হায়া সোফিয়া কি আসলেই অভিশাপ দেওয়া শুরু করল নাকি বুঝতে পারবেন। ২০১৬ সালে তুরুস্কের কারেন্ট একাউন্ট ঘাটতি ছিল ৩৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেটা ২০১৭ সালে হয় ৪৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর ২০১৮ সালে হয় ৫১.৬ মার্কিন বিলিয়ন। ২০০৫ সালে ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে যেখানে তুরুস্কের লিরা পাওয়া যেত ১.৩৫। আর ২০২১ সালে সেটা এসে দাড়িয়েছে ৭.০৯ লিরায়। মুদ্রার মান কি পরিমান অবমূল্যায়ন হয়েছে বুঝতে পারছেন কি।যেখানে তুরুস্কের মাথাপিছু জি ডি পির পরিমান ছিল ২০১৬ সালে ১০৮৯১ মার্কিন ডলার সেটা ২০২১ এসে দাড়িয়েছে ৯৩২৭ মার্কিন ডলারে। এবার একটু ঋন নিয়ে কথা বলি।তুরস্কের ২০২১ সালে বৈদশিক ঋনের পরিমান ছিল ২৬২.১ বিলয়ন ডলার যা দেশটির মোট জি ডি পি র ৩৬%।যা ২০১৬ সালে ছিল ৮৫ বিলিয়ন ডলার।এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে দেশ টি ঋনে জর্জরিত হতে যাচ্ছে,পাকিস্তানের মত। ২০২৬ সালে দেশটির বৈদেশিক ঋন দাঁড়াবে ৬ ০০ বিলিয়ন ডলারে।একটা তথ্য প্রাসঙ্গিক মনে হওয়াতে বলতে হচ্ছে বাংলাদেশের বৈদশিক ঋন মাত্র ৪৫ বিলিয়ন ডলার, আর পাকিস্তানের ১১৫.৫ বিলিয়ন ডলার।২০১৬ সালে যখন মুদ্রাস্ফীতির পরিমান তুরুস্কে ছিল ৭.৭৮% আর আজ ২০২১ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৩.৬%। দিন কে দিন তুরুস্কের মুদ্রার মান নিচের দিকে আসছে।পক্ষান্তরে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকা এখনো অনেক বেশী শক্তিশালী। ইন্ডিয়ান ১ রুপি কিনতে যেখানে আমাদের লাগত ১.৬৭ পয়সা এখন লাগে ১.১৬ পয়সা।যেই পাকিস্তানের মুদ্রা ১ রুপি দিলে আমাদের দিত ৪ টাকা কোন এক সময় সেখানে আমাদের এখন ১ টাকা দিলে পাকিস্তানের দুই টাকা পাই। ভাবা যায়। ২০১৬ সালে তুরুস্কের দারিদ্রতার হার ছিল ৯.৫% আর সেখানে ২০২১ সালে এসে দাড়িয়েছে ১২.২% এ।দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন কে দিন বাড়ছে তুরুস্কে।বিশ্ব সন্ত্রাস বাদের তালিকায় তুরুস্কের অবস্থান কত জানেন, ১৮ তম। আর বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩ তম। আর মানবতার ফেরিওয়ালা ইমরান খান চাচ্চুর দেশ ৭ নম্বরে।আচ্ছা প্রথম ১০ টা দেশের নাম বলি, কেউ আবার অন্য কিছু খুজতে যাবেন না।বিশ্বে সন্ত্রাসী তালিকার প্রথম দেশ, আফগানিস্তান, ২.ইরাক ৩.নাইজেরিয়া ৪.সিরিয়া৫.সোমালিয়া৬.ইয়েমেন ৭.পাকিস্তান ৮.চায়না ৯.কঙ্গো ১০. ফিলিপাইন। বাংলাদেশে গনতন্ত্র নাই বলে গলা ফাটানোর তুরুস্কের গনতন্ত্রে কি অবস্থা, চলেন দেখি।২০১৬ সালে গনতন্ত্রের সূচকে তুরস্কের অবস্থান ছিল ৭৫ নম্বর ২০১৫ তে ছিল ৬২ নাম্বার আর এখন হয়েছে ১০৪ নাম্বার। কি গনতন্ত্রের ফেরিওয়ালা আসছে এরদোগান। নিজের দেশের গনতন্ত্রের ঠিক নাই অন্য দেশের গনতন্ত্র নিয়ে পরে আছে ততাকথিত অটোম্যান খলিফা।২০১৬ সালে ক্ষুধা সুচকে যে দেশ ১৪ তম সেখানে ২০২০ এসে সেই দেশ ১৭ তম।৪ বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তেছে তুরুস্কে। যেখানে ২০১৬ সালে তুরুস্কের বেকারত্ব এর হার ছিল ১০.৮৭ % সেখানে ২০২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১৩.৯২%। নিজের দেশের বেকাররা কিভাবে আছে সেটা কি এর দোগান সাহেব ভেবে দেখেছেন। এবার আসি বিশ্ব দুর্নীতি সুচকে এদের অবস্থান কি? ২০১৬ সালে দুর্নীতি সুচকে তুরস্কের অবস্থান ছিল ৭৫ তম। আর ২০২১ সালে হয়েছে ৮৬ তম। তারমানে দুর্নীতি পরায়ন দেশ হিসেবে নাম লিখিয়ে ফেলেছে তুরস্ক। ২০১৭ সালে তুরুস্কে মোট বিনিয়োগের পরিমান ছিল ১৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিন্ত ২০১৮ সালে এসে তা দাড়িয়েছে মাত্র ৭৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। পশ্চিমারা খুব ভালো ভাবেই বুঝে গেছেন এরদোগান কে তাই দিন কে দিন তুরুস্কে আর বিনিয়োগ করছে না পশ্চিমা বিশ্ব।যাই হোক, আরো অনেক তথ্য দিতে পারতাম।লিখতে ভালো লাগছে না,আর। তুরুস্ক কে নিয়ে যে বাঙগালী এত মাতামাতি করে,এরদোগান কে আমাদের নেতা আমাদের নেতা ভাবে সেই এরদোগানের দেশের অবস্থা,বাঙ্গালী কি কোন দিন ভেবে দেখেছে।আর আরেক টা তথ্য দিলে তো বাঙ্গালী তো অবাক হয়ে যাবে। তুরস্কে মোট জনসংখ্যার ২৮.৫% ধর্মে বিশ্বাস করে না।যাই হোক,লেখাটা শেষ করি। হায়া সোফিয়া কি প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করল এরদোগানের তুরুস্কের উপর কে জানে সেটা।